ধোনি-শ্রীনির সাম্রাজ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ
ক জন আজ, বুধবার থেকে ওয়ান্ডারার্সের গতির পরীক্ষায় বসতে চলেছেন। অন্য জন তার ২৪ ঘণ্টা বাদে, বৃহস্পতিবারই হয়তো পুরনো শত্রুকে আবার রিংয়ের মধ্যে দেখতে পাবেন।
এক জনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ সচিনোত্তর টেস্ট ক্রিকেটে ডেল স্টেইন-মর্নি মর্কেলদের গতি সামলানো। অন্য জনের সমস্যা, তাঁর ঘনিষ্ঠদের ক্রিকেট রাজনীতিতে হঠাৎ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যাওয়া।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং তাঁর ‘ক্রিকেট অভিভাবক’ নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। তাঁদের গড়ে তোলা সাম্রাজ্যে হঠাৎ যেন এখন টেনশনের চোরাস্রোত। কোথাও প্রতিপক্ষের নাম দক্ষিণ আফ্রিকা, তো কোথাও সেই ললিত মোদী।
মঙ্গলবার যখন জোহানেসবার্গে প্রথম টেস্টের শেষ প্রস্তুতি সারছিল ধোনিবাহিনী, তখন ভারতের একাংশে শ্রীনির ঘনিষ্ঠ এক কর্তার ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হচ্ছিল। তিনি চিরায়ু আমিন। সন্ধ্যায় বরোদা ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদের লড়াইয়ে আমিনের হারের খবর শোনার পর মোদীর টুইট, “সমরজিৎ সিংহকে অভিনন্দন, শ্রীনি-অনুগত চিরায়ু আমিনকে হারিয়ে বিসিএ-র নতুন প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য।” প্রসঙ্গত, যে কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে মোদীকে আজীবন সাসপেন্ড করেছিল বোর্ড, তার অন্যতম সদস্য ছিলেন প্রাক্তন আইপিএল কমিশনার আমিন। তাঁর হারের সঙ্গে সঙ্গে বরোদা ক্রিকেটে ২৬ বছরের রাজত্বের অবসান ঘটল। তবে মোদীর প্রত্যাশা মতো, বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল নির্বাচনে হারেননি। অংশুমান গায়কোয়াড়ের সঙ্গে তিনি বিসিএ-র অন্যতম যুগ্মসচিব নির্বাচিত হয়েছেন।
শুধু টুইট করা নয়, মোদী নিজেই আবার শ্রীনিবাসনের বোর্ডের সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে নেমে পড়তে চলেছেন। রাজস্থান ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। যার জেরে বিসিসিআই হুমকি দিয়েছিল, মোদী না সরলে আরসিএ-কে সাসপেন্ড করা হবে। মঙ্গলবার জয়পুরে ফোন করে জানা গেল, পিছু হঠার কোনও ইচ্ছা মোদী শিবিরের নেই। এমনকী তাদের গেমপ্ল্যানও নাকি তৈরি। বোর্ড আরসিএ-কে সাসপেন্ড করলে সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে যাবার ভাবনা আছে। এও ঠিক আছে, সাসপেন্ড হলে প্রয়োজনে অ্যাড হক কমিটি গড়ে সংস্থা চালানো হবে। এবং সুযোগ হলে মোদীকে সেই কমিটিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।
মোদী নিজেও যুদ্ধং দেহি মেজাজে। টুইট করে বলছেন, “গেম অন।” একই সঙ্গে মোদী সমান উত্তেজিত, বিষেণ সিংহ বেদীর দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার নির্বাচনে লড়া নিয়ে। তাঁর বক্তব্য, আর এক শ্রীনি অনুগত অরুণ জেটলির সামনেও এ বার বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছেন বেদী।
মোদী শেষ পর্যন্ত শ্রীনির দিকে কতটা কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবেন, সেটা এখনই জানা যাবে না। কিন্তু অধিনায়ক হিসাবে নিজের ৫০তম টেস্টে তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করে আছে, সেটা আগামী পাঁচ দিনে জেনে যাবেন ধোনি।
ওয়ান্ডারার্সে প্র্যাকটিসে এসে সাংবাদিকদের ধোনি বলেছেন, “ওয়ান ডে-তে যে ভুলগুলো হয়েছে, সেগুলো এই ক’দিনের প্র্যাকটিসে শুধরেছি। ঠিক কোন লেংথে বল করতে হবে, কোন বলগুলোকে ছাড়তে হবে, কোন বলে কী শট নিতে হবে, সেগুলোও ঠিক করে নিয়েছি সবাই। এ বার পরিকল্পনাগুলোকে কাজে লাগানোর পালা।”
জোহানেসবার্গে আগামী পাঁচ দিন ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সে সব নিয়ে না ভেবে ধোনির নজর ওয়ান্ডারার্সের বাইশ গজে, “শুরুর দিকে পেসাররা যথেষ্ট সাহায্য পাবে। আমাদের বোলারদের নতুন বলে ভাল বল করাটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। জাহিরের মতো অভিজ্ঞ পেসার যখন দলে রয়েছে, তখন তরুণ পেসাররাও আশা করি ওর দেখানো রাস্তায় হেঁটে দলকে সাহায্য করতে পারবে।” সচিন, রাহুল, সহবাগ, ভিভিএস, সৌরভ কেউ নেই এ বারের দলে। এই ব্যাপারে ধোনির বক্তব্য, “অভিজ্ঞরা থাকলে তাদের আলাদা করে কিছু বলে তো দিতে হয় না, বরং তাদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পাওয়া যায়। সেটা এ বার পাব না জেনেই এসেছি। সে ভাবেই নিজেদের তৈরি করছি আমরা।”
বাইশ গজ আর বাইশ গজের বাইরের লড়াই। আগামী কয়েক সপ্তাহ সম্ভবত এই নিয়েই সরগরম থাকবে ভারতীয় ক্রিকেট।

দুই চ্যালেঞ্জার
শ্রীনি-অনুগত চিরায়ু আমিনকে বরোদা ক্রিকেট নির্বাচনে হারানোর জন্য সমরজিৎ সিংহ গায়কোয়াড়কে অভিনন্দন। এ বার যুদ্ধটা দিল্লিতে সরে যাচ্ছে। আর এক শ্রীনি-ঘনিষ্ঠ অরুণ জেটলির সঙ্গে লড়াই প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বেদীর। ম্যাচ তো সবে শুরু হল!
এখানে কিন্তু ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন। বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় সফল হলে আপনার চারিত্রিক দৃঢ়তাটা বোঝা যায়। ওয়ান্ডারার্সের পিচে আশা করি বাউন্স থাকবে। আর্দ্রতাও থাকবে। আমরা যে কঠিন ক্রিকেটটা খেলে এত দিন সফল হয়েছি, ভারতের বিরুদ্ধে সেটাই খেলব।

দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্টে সচিন
১৯৯২-২০১১ (পাঁচ সিরিজে) ১৫ ম্যাচে ১১৬১ রান,
সর্বোচ্চ ৬৯, গড় ৪৬.৪৪, সেঞ্চুরি ৫, হাফসেঞ্চুরি ৩।
শেষ টেস্ট ইনিংসেও (২০১১ কেপটাউন) ১৪৬।

সিংহের দেশে টিম ধোনির পঞ্চ অভিজ্ঞ
মুরলী বিজয় ১ টেস্টে ২৮ রান, সর্বোচ্চ ১৯, গড় ১৪
চেতেশ্বর পূজারা ২ টেস্টে ৩১ রান, সর্বোচ্চ ১৯, গড় ১০.৩৩
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ৫ টেস্টে ২৮৩ রান, সর্বোচ্চ ৯০, গড় ৩১.৪৪, হাফসেঞ্চুরি ১, ক্যাচ ১৬
জাহির খান ৬ টেস্টে ২৩ উইকেট, সেরা ৪-৬২, গড় ৩২.৫২
ইশান্ত শর্মা ৩ টেস্টে ৭ উইকেট, সেরা ২-৭৭, গড় ৪৮.১৪

ওয়ান্ডারার্সে ভারত টেস্টে অপরাজিত
১৯৯২ (সিরিজের দ্বিতীয়) ম্যাচ ড্র। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৯২ ও ২৫২, ভারত ২২৭ ও ১৪১-৪।
(পেস-বাউন্সের পিচে সচিন প্রথম ইনিংসে ১১১, টার্নিং উইকেট না সত্ত্বেও দ্বিতীয় ইনিংসে কুম্বলে ৬-৫৩)

১৯৯৭ (সিরিজের তৃতীয়) ম্যাচ ড্র। ভারত ৪১০ ও ২৬৬-৮ ডি., দক্ষিণ আফ্রিকা ৩২১ ও ২২৮-৮
(সবুজ পিচে বুমেরাং শ্রীনাথ প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট, দ্রাবিড় দু’ইনিংসে ১৪৮ ও ৮১)

২০০৬ (সিরিজের প্রথম) ভারত ১২৩ রানে জয়ী। ভারত ২৪৯ ও ২৩৬, দক্ষিণ আফ্রিকা ৮৪ ও ২৭৮।
(ফের সবুজ পিচে বুমেরাং শ্রীসন্ত প্রথম ইনিংসে ৫-৪০। ম্যাচে ৮-৯৯)
 
পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.