স্টেইন-মর্কেলকে পঞ্চম স্পেল
করানোটা প্রথম লক্ষ্য হোক
বেশির ভাগই টেস্ট সিরিজে ভারতের কোনও আশা দেখছেন না। সেটা মাথায় রেখে বলব, তা হলে ভারতের হারানোর কিছু নেই। বরং পাওয়ার আছে। কোনও ভাবে যদি দক্ষিণ আফ্রিকার জোরে বোলারদের আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দেওয়া যায়, সেটা বিরাট বড় সুবিধা হবে ভারতের।
এটা বলতে ভাল লাগবে, শুনতেও ভাল লাগবে যে ভারতের জেতার জন্য ঝাঁপানো উচিত। কিন্তু বাস্তবটা আমাদের মেনে নিতেই হবে। সেই সম্ভাবনা কিন্তু সীমিত। শুধু চেঁচামেচি করলেই তো হবে না, তার মধ্যে সারবত্তা থাকতে হবে।
ভারতের জন্য প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত দীর্ঘ সময় উইকেটে টিকে থাকা। ডেল স্টেইন আর মর্নি মর্কেলকে পাঁচ বা ছ’নম্বর স্পেল করতে বাধ্য করা। তার জন্য অফ স্টাম্পে কী ভাবে খেলতে হবে সেটা নিয়ে নিজের মনে একটা পরিষ্কার ধারণা যেমন থাকতে হবে, তেমনই শরীরের দিকে বেশি উচ্চতায় আসা ডেলিভারি সামলাতে জানতে হবে। শরীর থেকে দূরে সিম আর সুইং করা ডেলিভারি খেলার চেষ্টা না করাই ভাল। শরীরের কাছাকাছি ডেলিভারিগুলো খেলতে হবে। ধাক্কা দিতে হবে ফাস্ট বোলারদের ইগোতে। বিশ্বাস করতে হবে নিজের দাপট দেখানোর সহজাত ক্ষমতার উপর। বলের লাইনে গিয়ে খেলার ব্যাপারটা মাথায় ঢুকিয়ে নিতে হবে। তা হলে আধিপত্যটাও ভারতের দিকে চলে আসবে।
স্লিপ আর ক্লোজ ইনে আগ্রাসী ফিল্ডারদের সামলাতে হবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। একই সঙ্গে টানা পেস আক্রমণের দিকটাও রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা পাঁচ না হলেও কালিসকে ধরে চার জন ফাস্ট বোলার খেলাবে। বোঝাই যাচ্ছে ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় নতুন বল পর্যন্ত ইনিংস টানতে ওরা চাইবে না।
মুরলী বিজয় আর চেতেশ্বর পূজারার জন্যও এই টেস্ট বিরাট বড় পরীক্ষার। এর আগেও দক্ষিণ আফ্রিকায় ওরা টেস্ট খেলেছে বটে কিন্তু সেই সফরে স্টেইন আর তার সাঙ্গোপাঙ্গদের মতো দুর্ধর্ষ বোলিং আক্রমণের মোকাবিলা করতে হয়নি ওদের। ভাল বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে শুধু ছ’সাত জন ব্যাটসম্যানই যথেষ্ট নয়। দলে ক্রিজে কয়েক ঘণ্টা কাটানোর ক্ষমতা রাখা টেলএন্ডারদের থাকাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সমস্ত সফল দলেই দারুণ একজন উইকেটকিপার আর টেলএন্ডার থাকে। ভারতীয় বোলারদেরও ব্যাটিংয়ের সময় প্রচণ্ড সাহস তো দেখাতেই হবে, সঙ্গে প্রয়োজন অনুযায়ী রুখে দাঁড়ানোর ব্যাপারে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আশা করছি ভারতীয় বোলাররা টেস্টে আরও ভাল খেলবে। ওয়ান ডে সিরিজে ওরা ক্রমশ উন্নতি করেছে। আশা রয়েছে পোড় খাওয়া জাহির খান উদাহরণ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পারবে। ইশান্ত শর্মাকেও আগামী এক বছর বড় ভূমিকা নিতে হবে। ওর কাজ ব্যাটসম্যানদের বেশি নড়াচড়া করতে না দিয়ে অস্বস্তিতে রাখা। ওয়ান্ডারার্সের মতো উইকেট, যেখানে স্পিনাররা পিচ থেকে খুব একটা সাহায্য পায় না, সেখানে ভারতীয় স্পিনারদের জন্যও কাজটা খুব সহজ নয়। তা ছাড়া রবি অশ্বিন বিদেশের মাঠে খুব কম টেস্টই খেলেছে। এই টেস্ট সিরিজ আর আগামী বছরে অশ্বিনের সামনে তাই শেখার অনেক রসদ থাকবে।

ওয়ান ডে সিরিজে ব্যর্থতার পর প্রথম টেস্টে আমি হলে অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান হিসেবে রাহানেকে খেলাতাম। ভারতের এই টিমটা দ্রুত শেখে। ব্যাটিংয়ে গভীরতাও আছে। ব্যাটিংই ভারতের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। শুধু একটু ধৈর্য চাই। জাহিরের দলে ফেরাটা সাহায্য করবে। ওয়ান্ডারার্সের পিচ শক্ত, অসমান বাউন্সও থাকবে।
বোর্ডের উচিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও আগে টিম পাঠানো। আরও চিন্তা-ভাবনা প্রয়োজন ছিল। সচিন, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণের মতো প্লেয়ারদের অভাব সব সময়ই মনে হবে। সে সব এখন ভাবলে চলবে না। নতুন প্লেয়ারদের আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারত দু’টো টেস্টই জিতবে এমনটা মনে হচ্ছে না। প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে পারফর্ম করতে হবে। না হলে টিমে ভয় ঢুকে যাবে। শুধু গতি নয়, উইকেট পাওয়ার রহস্যটা জানতে হবে। জাহিরকেই দেখুন। উমেশ যাদবের মতো বোলারদের শেখা উচিত।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.