তৃণমূলে যোগ দিতে চান ক্ষুব্ধ আবু নাসের
মৌসম বেনজির নূরকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি করায় আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রয়াত গনি খান চৌধুরীর ভাই তথা সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী (লেবু)। এ বার তিনি জানালেন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা। মৌসম অবশ্য জানিয়েছেন, আবু নাসের কোনওদিনই কংগ্রেস ছাড়বেন না।
বুধবার লেবুবাবু ফোন করে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যের নারী ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে তৃণমূলে যোগ দিতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। তিনি বলেছেন, “আমি সব দিক ভেবেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” এর পরে এ দিন সকালেই তড়িঘড়ি এক প্রতিনিধিকে কোতুয়ালিতে পাঠিয়ে আবু নাসের খান চৌধুরীর সঙ্গে এক দফা আলোচনা সেরে ফেলেছেন সাবিত্রীদেবী। গনিখান চৌধুরীর ভাইয়ের দলে আসতে চাওয়ার কথাও তিনি দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলে জানান সাবিত্রীদেবী। তাঁর দাবি, “লেবুবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এ কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। দু’তিন দিনের মধ্যেই লেবুবাবু কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। এর পর লেবুবাবু আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেবেন।”
বছরখানেক আগে গনিখান চৌধুরীর এক ভাগ্নী শেহনাজ কাদরি তৃণমূলে যোগ দেন। এখন ফের লেবুবাবুকে দলে টেনে লোকসভা ভোটের মুখে কোতুয়ালিতে বড়সড় ধাক্কা দিতে চাইছে তৃণমূল। যদিও জেলা কংগ্রেস সভাপতি মৌসম বেনজির নূর দাবি করেন, তাঁর মামা তথা লেবুবাবু কংগ্রেসকেই ভালোবাসেন। মৌসমের কথায়, “কংগ্রেস ছেড়ে লেবুমামা কোনও দিনই অন্য কোনও দলে যাবেন না।” তাঁর বিরুদ্ধে দাদার তোলা অভিযোগে দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “এআইসিসি মৌসমকে জেলা সভাপতি করেছে। আমি করিনি। দাদা অভিমানে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে তা ঠিক নয়। তা ছাড়া আমি এখনও মানতে পারছি না লেবুদা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন। সম্ভবত কেউ আমার বিরুদ্ধে লেবুদাকে ভুল বুঝিয়েছে।”
ভাগ্নি দলের জেলা সভানেত্রী হতেই অবশ্য ক্ষোভ জানিয়েছিলেন আবু নাসের খান চৌধুরী। বুধবার জেলা তৃণমূল সভাপতির প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করার পরে ভাই ডালু (আবু হাসেম খান চৌধুরী) ও ভাগ্নি মৌসমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তোলেন তিনি। এ দিন স্ত্রী তন্দ্রা দেবীকে পাশে বসিয়ে ৮৪ বছর বয়সী লেবুবাবুর অভিযোগ, “ডালু গনি খানের সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন। গনি খানের ১০০ বিঘের বাগান, কলকাতার ৪টি বাড়ি বিক্রির টাকা কী হয়েছে, সেই হিসেবও দিতে হবে ওঁকে। ১৯৮০ সালে ও যখন কানাডা থেকে মালদহে খালি হাতে এসেছিল। এখন ও বিপুল সম্পত্তির মালিক। ডালুর এত সম্পত্তি কোথা থেকে হল তার তদন্ত হোক।” এর পরেই লেবুবাবুর আরও অভিযোগ, ডালুবাবু কংগ্রেস দলটাকে মালদহে শেষ করে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, “একটা সময়ে ডালুকে জেতাতে আমি ওর হয়ে ১২৫ টি সভা করেছিলাম। আজ যেন প্রতিদান পেলাম।” নিজের সম্পত্তির খতিয়ানও দিয়েছেন লেবুবাবু। তাঁর দাবি, “যখন ভারতে এসেছিলাম, তখন এক ব্রিটিশ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে দেড় কোটি টাকা নিয়ে এসেছিলাম। এখন এক লক্ষ টাকার উপরে লন্ডল ও সুইজারল্যান্ড থেকে পেনশন পাই।”
তবে লেবুবাবুর আশঙ্কা, তৃণমূলে যোগ দিলে তাঁকে গনি খান চৌধুরী টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানোর ছক কষা হবে। সেই সঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসে সভাপতির কাছে রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন লেবুবাবু। দলীয় সূত্রে খবর, লেবুবাবু তৃণমূলে যোগ দিলে তাঁকে উত্তর মালদহ লোকসভায় মৌসম বেনজির নূরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর কথা ভাবা হচ্ছে।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.