শীতের মরসুমে সরকারি উদ্যোগে আরও একটি উৎসব। পৌষ উৎসব।
কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটে আগামী ২২ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে তিন দিনের পৌষ উৎসব। তবে দিনভর ওই উৎসব চলবে না। বিকেল ৫টায় শুরু হয়ে শেষ হবে সন্ধে সাড়ে ৭টায়। আয়োজক রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, কলকাতায় পৌষ উৎসবের সূচনা হবে বাউল গান দিয়ে। সেই সঙ্গে আধুনিক, রবীন্দ্রসঙ্গীত, লোকসঙ্গীতও গাইবেন শহরের শিল্পীরা। প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে-র প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ওই উৎসবেই পৃথক একটি অনুষ্ঠানের বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে ২৩ ডিসেম্বর। উৎসবের শেষ দিনে থাকছে ক্যারল অ্যান্ড কয়্যার (বড়দিনের আনন্দগান) এবং কলেজ ব্যান্ড।
পৌষ উৎসবের আগেই অবশ্য মহানগরে শুরু হচ্ছে পার্ক স্ট্রিট ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল। কলকাতা পুরসভা ও রাজ্যের পর্যটন দফতরের যৌথ আয়োজনে সে-কালের সাহেবপাড়াকে এ বার আরও বেশি আলো দিয়ে সাজানো হচ্ছে বলে জানান এক পুরকর্তা। তিনি বলেন, “গত দু’বছর ধরে বড়দিন উপলক্ষে পার্ক স্ট্রিট আলোকসজ্জায় সাজছে। তবে এ বার বাজেট অনেক বেশি। চন্দনগরের আলো দিয়ে গোটা রাস্তা মুড়ে ফেলা হচ্ছে।” নবান্ন সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিক থাকলে কাল, শুক্রবার ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রিন্সেপ ঘাটে পৌষ উৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন কি না, তা অবশ্য এখনও ঠিক হয়নি বলে জানান তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কর্তারা। তবে তাঁদের আশা, উৎসবের যে-কোনও দিন মুখ্যমন্ত্রী গান শুনতে যেতে পারেন। ওই দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা শুরু হচ্ছে ২৩ ডিসেম্বর (৭ পৌষ)। কলকাতার পৌষ উৎসব তার এক দিন আগে শুরু হলেও তেমন মেলার চেহারা নেবে না। শুধুই তিন দিন সন্ধের পরে ঘণ্টা তিনেকের গানের অনুষ্ঠান।”
ওই উৎসব উপলক্ষে এখন প্রিন্সেপ ঘাটে চলছে রং করার কাজ। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে পূর্ত দফতর ওই ঘাট-চত্বর নতুন করে সাজিয়ে তুলেছে। পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, “সূর্য ডোবার পরে ওই এলাকায় সচরাচর কেউ থাকত না। মাঝেমধ্যেই চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠত। এখন জোরালো আলো লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সন্ধের পরেও লোকজন সপরিবার প্রিন্সেপ ঘাটে ঘুরছেন। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে।”
গত আড়াই বছরে রাজ্যে মাটি উৎসব, হুল উৎসব, উত্তরবঙ্গ উৎসব, যুব উৎসবের মতো বেশ কিছু উৎসব হয়েছে সরকারি উদ্যোগে। এ বারেও সেই সব উৎসব হওয়ার কথা। নবান্নের এক কর্তা জানান, ১ ফেব্রুয়ারি পানাগড়ে শুরু হচ্ছে মাটি উৎসব। তবে বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে ১২ জানুয়ারি যুবকল্যাণ দফতর যে-যুব উৎসব পালন করে, এ বার তার নাম বদলেছে। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে ওই উৎসবের নাম হয়েছে ‘বিবেক চেতনা উৎসব’। এখন ব্লক স্তরে ওই উৎসব চলছে। তার পরে জেলা ছাড়িয়ে ১২ তারিখে ওই উৎসবের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হবে কলকাতা রেড রোডে।” |