সামনে লোকসভা ভোট। সেই দিকে তাকিয়েই সংখ্যালঘু মন পেতে মরিয়া চেষ্টা পুরো দমে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক শিবিরে! সংখ্যালঘু অধিকার দিবসকে উপলক্ষ করে বুধবার সেই চেষ্টাই দেখা গেল শাসক ও বিরোধী, সব পক্ষের মধ্যে।
সংখ্যালঘু অধিকার দিবস উদ্যাপনের জন্যই এ দিন রাজাবাজারে সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূলের সংখ্যালঘু শাখা। সেই জমায়েতে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাঁদের রাজত্বে তসলিমা নাসরিন বা সলমন রুশদিদের ঠাঁই হবে না পশ্চিমবঙ্গে! সরাসরি তসলিমার নাম না-করেই ববি বলেন, “আমাদের আবেগকে যিনি অসম্মান করছেন, দিল্লির সরকার সেই লেখিকাকেই নিরাপত্তা দিচ্ছে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যত দিন পশ্চিমবঙ্গে থাকবেন, ওই লেখিকার কোনও স্থান হবে না! রুশদিরও কোনও স্থান হবে না পশ্চিমবঙ্গে!” সংখ্যালঘু আবেগে আঘাত করা সত্ত্বেও বিশিষ্ট জনেরা কেন এই বিষয়টি নিয়ে সরব হচ্ছেন না, সেই ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলেছেন মন্ত্রী। পাশাপাশিই প্রশংসা করেছেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু শাখার চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলির। পাঁচ বছর আগে কলকাতায় তসলিমা-কাণ্ডে যাঁর বড় ভূমিকা ছিল।
তৃণমূল যখন সংখ্যালঘু আবেগ স্পর্শ করতে সচেষ্ট, কংগ্রেস-বাম তখন আবার তাদের বিঁধেছে বিজেপি-র সঙ্গে এক বন্ধনীতে ফেলে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ প্রতিরোধ বিল ও ধর্মনিরপেক্ষতা শীর্ষক একটি আলোচনাসভায় এ দিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম মন্তব্য করেছেন, “কলকাতায় যে দিন গুজরাতের অমিত শাহ বিজেপি-র জনসভা করছেন, সেই দিন প্রায় একই সময়ে ফেসবুকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী পোস্ট করেছেন। যুক্তি এবং ভাষা প্রায় এক!” নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি এবং মমতার তৃণমূল কেন ওই বিলে বাধা দিচ্ছে, সেলিমের মতো একই প্রশ্ন তুলেছেন কিছু সংখ্যালঘু ব্যক্তিত্বও। পক্ষান্তরে, রাজাবাজারে ববি মন্তব্য করেছেন, বাংলায় ‘মোদী জুজু’ দেখানোর কোনও মানে হয় না! কারণ, এ রাজ্যে মোদীর দলের কোনও অস্তিত্ব নেই।
আলোচনাসভায় বিজেপি-র পক্ষে শমীক ভট্টাচার্য আবার পাল্টা বলেছেন, ওই বিল সংখ্যালঘুদের স্বার্থেরই ক্ষতি করবে। আর প্রাক্তন পুলিশকর্তা দীনেশ বাজপেয়ী মত দিয়েছেন, বিলটির উদ্দেশ্য ভাল হলেও তার খসড়া অসম্পূর্ণ। |