লরি গেলেই ধুলোয় ঢাকে শালবনির রাস্তা
কটা লরি গেলেই চারদিক ধুলোয় ঢেকে যায়। কিছু দেখা যায় না। শালবনির দক্ষিণশোল থেকে চ্যাংশোল যাওয়ার রাস্তার হাল এমনই। শুধু কি ধুলো? মাঝেমধ্যে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। তার জেরে দুর্ঘটনাও ঘটে। তবু রাস্তা সংস্কারের তোড়জোর নেই।
অথচ এই এলাকায় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অধীন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক- কর্মীরা এখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসেন। এলাকায় অ্যাসবেসটস তৈরির একটি কারখানাও রয়েছে। তা-ও রাস্তার এই হাল।
ধুলোময় দক্ষিণশোল থেকে চ্যাংশোল যাওয়ার রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
শালবনির এই এলাকাটি মেদিনীপুর বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “সমস্যার কথা জানি। রাস্তার উপর প্রচুর ধুলো জমে থাকে। তাই স্থানীয় মানুষ সমস্যায় পড়েন। রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।” প্রায় তিন কিলোমিটার এই রাস্তার আশপাশে রয়েছে শালচাতরি, শালডহরি, ধান্যশোল, বাগবাসার মতো বেশ কিছু গ্রাম। দক্ষিণশোলের বাসিন্দা সুশান্ত সরকার বলছিলেন, “যাতায়াতে খুব সমস্যা হয়। রাতে সমস্যা আরও বাড়ে। লরি আসছে দেখলে দাঁড়িয়ে যেতে হয়।” একই মত স্থানীয় অমিত সরকার, সঞ্জীব মাহাতোদের। অমিতবাবুর কথায়, “ধুলো পেরিয়ে যাতায়াতের ফলে এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও সমস্যায় পড়ে।” শুধু এই রাস্তাই নয়, শালবনির আরও বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। যেমন কাছারি রোড থেকে শৌলা, পিড়রাকুলি থেকে লক্ষ্মণপুর, জয়পুর থেকে শিরষি। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পিচ রাস্তাও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। চারপাশে পিচ উঠে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্তে চাকা ঢুকে গিয়ে যে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটে। অভিযোগ, তবু রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেই। সমস্যা যে রয়েছে, তা মানছেন শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ চেয়ে জেলায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কথায়, “কোন কোন রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার করা জরুরি, তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতিপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোই আগে সংস্কার হবে। সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে খবর, পরিস্থিতি দেখে একশো দিনের কাজ প্রকল্পেও কয়েকটি মোরাম রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন ১৭টি রাস্তার তালিকা তৈরি হয়েছে। প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে জেলায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লকের মধ্যে শালবনি অন্যতম। সব মিলিয়ে ১০টি অঞ্চল রয়েছে এখানে। এমনিতেই প্রত্যন্ত গ্রামে রাস্তাঘাটের হাল তেমন ভাল নয়। তার উপর যে সব রাস্তা পাকা রয়েছে, সেগুলোর একাংশ সংস্কারের না হওয়ায় স্থানীয়রা সমস্যায় পড়ছেন। স্থানীয়দের বক্তব্য, বর্ষার পর কয়েকটি রাস্তায় নতুন করে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে। তা-ও সংস্কারে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। পঞ্চায়েত সমিতির অবশ্য বক্তব্য, সব ক্ষেত্রেই সমস্যা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সমিতি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে বাঁকিবাঁধের একটি, বিষ্ণুপুরের ৩টি, গড়মালের ৪টি, শালবনির একটি, দেবগ্রামের ২টি, লালগেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬টি মোরাম রাস্তা নতুন করে সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির
সভাপতি নেপালবাবু মানছেন, “দেবগ্রাম-সহ কয়েকটি অঞ্চলের আরও কিছু রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। এ সব ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।” আশ্বাস মতো কাজ হয় কি না, সেটাই দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.