শনি-রবি কাজ করেও চাপ কমেনি জমি-মিউটেশনের
পাহাড় প্রমাণ মিউটেশনের আবেদন জমে। চাপ সামলাতে নভেম্বর থেকে শনি-রবি ছুটির দিনেও কাজ করছেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা। পরিস্থিতি দেখে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকই ছুটি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাড়তি কাজ করেও কিন্তু ছবিটা বিশেষ পাল্টায়নি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে মিউটেশন হয়েছিল ১০৬২৫টি। আর ছুটির দিনে কাজ করে নভেম্বর মাসে ১২৯৪১টি মিউটেশন হয়েছে। অর্থাৎ নভেম্বরে জেলার ২৯টি ব্লকে অতিরিক্ত ২৩১৬টি মিউটেশন হয়েছে। এর ফলে মিউটেশনের জন্য জমে আবেদনের সংখ্যা ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৫৩২ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৫৯১। অর্থাৎ এখনও পাহাড় প্রমাণ কাজ বাকি।
ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে মিউটেশনের জন্য প্রতি মাসে জেলার বিভিন্ন ব্লক মিলিয়ে গড়ে ৭-১০ হাজার নতুন আবেদন জমা পড়েছে। তার সঙ্গে ইতিমধ্যে পড়ে থাকা আবেদন যোগ হয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এর ফলে, হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। জমি কেনার পরে তা নিজের নামে করতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যাচ্ছে। আর নাম পরিবর্তন না হলে ওই জমিতে বাড়ি তৈরি বা ব্যবসা করার অনুমতি কোনওটাই মিলবে না। এমনকী ঋণও মিলবে না। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত গতিতে মিউটেশন করার দাবি জানিয়ে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে ভুরি ভুরি আবেদন জমা পড়ছে।
দ্রুত গতিতে কী ভাবে কাজ করা যায় সেই সিদ্ধান্ত নিতে গত নভেম্বরে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সব আধিকারিকদের নিয়ে এক বৈঠক হয়। সেখানেই জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি এবং জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত জানিয়েছিলেন, এখন থেকে সপ্তাহে ছুটির দিনে অর্থাৎ শনিবার ও রবিবারও কাজ করতে হবে। যে ব্লকে যত বেশি আবেদনপত্র পড়ে রয়েছে, সেই ব্লককে তত বেশি ছুটির দিনে অফিস খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো ছুটির দিনে অফিসে আসা শুরু করেন ভূমি সংস্কার আধিকারিকেরা। তারপরেও মিউটেশনের কাজে তেমন গতি আসেনি। সব থেকে খারাপ অবস্থা চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে। এখানে নভেম্বর মাসে পড়ে থাকা আবেদনের সংখ্যা ছিল ১৪১৮১টি। ওই মাসে আরও ১৯১টি নতুন আবেদন জমা পড়ে। মাসের শেষে দেখা যায়, মাত্র ১৮৫ জনের মিউটেশন করা গিয়েছে। সব মিলিয়ে জমে থাকা আবেদনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪১৮৬টি।
এখন প্রশ্ন কী ভাবে কাজে গতি আনা সম্ভব? জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দমবাবুর বক্তব্য, “আরও জোর দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। তবে এ বার তিনটি ব্লকে কম্পিউটার খারাপ থাকায় কিছু সমস্যা হয়েছিল। যাতে গতি আরও বাড়ে তার জন্য পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।” ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রের খবর, জেলার যে সব ব্লকে ৫ হাজার বা তার বেশি আবেদনপত্র জমা পড়ে রয়েছে, সেখানে মাসে দু’টি শনিবার অফিস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর যে সব ব্লকে ১০ হাজারের বেশি আবেদনপত্র পড়ে রয়েছে তাঁদের প্রতি শনিবার তো বটেই, মাসে দু’টি রবিবারও অফিস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে প্রত্যেক রাজস্ব আধিকারিককে মাসে ৩০০টি এবং বিএলআরও-কে দেড়শোটি মিউটেশন করার লক্ষ্যমাত্রাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। এ ভাবে চললে ২৭ হাজার মিউটেশন হওয়ার কথা। পরিবর্তে হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার মিউটেশন। অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম। তাই এ বার রাজস্ব আধিকারিকদের ক্ষেত্রে আরও ৫০টি করে মিউটেশন করার লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। বিএলআরওদের ১৫০টির পরিবর্তে ২০০টি ও রাজস্ব আধিকারিকদের ৩০০টির পরিবর্তে সাড়ে ৩০০টি করে মিউটেশন করতে বলা হয়েছে। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আশা, এ ভাবে ৬ মাস চললে কাজ অনেকটাই এগিয়ে যাবে। হয়রানি থেকে মুক্তি পাবেন সাধারণ মানুষ।
বাস্তবে অবস্থা কতটা বদলায় সেটাই দেখার।
কাজের পাহাড়
ব্লক পড়ে থাকা মিউটেশনের আবেদন সংখ্যা
চন্দ্রকোনা-১ ১৪১৮৬
ডেবরা ১৩৪৫৬
সবং ১২৩৬৫
গড়বেতা-১ ১০০৯১
পিংলা ৫৭৫২
খড়্গপুর-২ ২৯৮৬


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.