কয়েক’শো কিলোমিটার পথ উজিয়ে দিন কয়েক আগে ঝাঁকে-ঝাঁকে এসেছে ওরা। আসছে আরও। সাড়ে তিনশো থেকে চারশো সরাল হাঁসের কলরবে মুখরিত ঘাটাল শহর সংলগ্ন মনোহরপুর ২ পঞ্চায়েতের হরিসংহপুরে পার্ক। তারা যাতে নিজেদের মতো করে থাকতে পারে, সে জন্য বন দফতরের কর্মীরা ঝিলেই সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি পাহারা দিচ্ছেন। ফি বছর ‘শীতের অতিথি’দের আসা নিশ্চিত করতে চিন্তাভাবনাও শুরু করেছে বন দফতর। এলাকার মানুষদের সচেতন করার জন্য শিবির, লিফলেট ছড়ানোর পাশাপাশি জোর দেওয়া হচ্ছে সবুজায়নে। বিশেষ করে হরিসিংহপুর পার্কের ঝিলটিকে সাজিয়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে। ডিএফও (খড়্গপুর) অঞ্জন গুহ বলেন, “আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। শীতের ওই অথিতিরা প্রতি মরসুমেই যাতে আসে তা নিশ্চিত করতে বেশি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্কটিকে সাধারণ মানুষের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে আলোচনা চলছে।” |
ঝিলে সরাল হাঁসের দল।—নিজস্ব চিত্র। |
সরাল প্রজাতির যে পরিযায়ীরা এ বার ঝাঁকে-ঝাঁকে ঘাটালে এসেছে, তাদের পোশাকি নাম ‘লেসার হুইসলিং টিল’। দেখতে ছোট হাঁসের মত। ঠোঁটও অবিকল দেশি হাঁসের মতো। গায়ের রঙ ধূসর-বাদামি। ঠান্ডা দেশের এই পরিযায়ীরা দূষণ মুক্ত জল-জঙ্গল ঘেঁষা প্রকৃতিতে দল বেঁধে থাকতে ভালবাসে। এ বার সাড়ে তিনশো থেকে চারশো সরাল হাঁস এসেছে ঘাটালে। আনন্দবাজারে ছবি-সহ তা প্রকাশিত হতে নড়েচড়ে বসেছে বন দফতর থেকে স্থানীয় প্রশাসন। বন দফতরের একাধিক কর্তা ইতিমধ্যেই ঝিলে গিয়ে পরিযায়ীদের দেখে গিয়েছেন। পরিযায়ীদের যাতে লোকজন বিরক্ত না করে তার জন্য বন দফতরের কর্মীরা সজাগ পাহারায় রয়েছেন। এলাকার মানুষকে এই নিয়ে সচেতন করতে বেশ কিছু ব্যবস্থাও নিচ্ছে বন দফতর। দফতর সূত্রে খবর, চলতি মাসেই বন দফতর থেকে ঘাটালে পরিযায়ী পাখি নিয়ে একটি সচেতনতা শিবির করা হবে। বিলি করা হবে লিফলেট। হবে পদযাত্রা। ডিএফও বলেন, “আমরা পরিযায়ীদের সুরক্ষায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কেননা, পাখিগুলিকে নিজেদের মতো থাকতে না দিলে, তারা অস্বস্তিতে পড়বে। আগামী দিনে ঝিলটিকে আরও সাজিয়ে তোলা হবে।”
উল্লেখ্য, ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতি ওই পার্কের দায়িত্বে। সমিতির পক্ষে দিলীপ মাঝি বলেন, “ওই পার্কে বহু মানুষ পিকনিক করতে আসেন। তাঁরা যাতে পাখিদের বিরক্ত করতে না পারেন তা দেখতে আমরা ইতিমধ্যেই দশ জনের একটি কমিটি তৈরি করেছি।” ঘাটালের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিতও বন দফতরকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। |