পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে বুধবার উত্তাল হল ঢাকা। একাত্তরে গণহত্যার অন্যতম নায়ক কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে বাংলাদেশের রাজধানী শহরের প্রাণকেন্দ্র শাহবাগ চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে অবস্থান শুরু করেছিল যে নতুন প্রজন্ম, তাঁরাই এ দিন পাকিস্তান দূতাবাস অভিযান করে অস্থায়ী ভাবে হলেও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি তুলেছেন। পাকিস্তানের পতাকায় আগুনও দেওয়া হয়। পোড়ানো হয় ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসা তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ইমরান খানের কুশপুতুলও।
সোমবার পাকিস্তানের আইনসভায় কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে নিন্দা-প্রস্তাব নেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে কাদের মোল্লাকে নিরপরাধ ও দেশপ্রেমিক বলে অভিহিত করা হয়। শাসক পিএমএল-এর পাশাপাশি অধিকাংশ বিরোধী দল, এমনকি বিরোধী নেতা ইমরান খানও কাদের মোল্লাকে শহিদের মর্যাদা দেন। প্রস্তাবে বলা হয়, ৪২ বছর আগের স্মৃতিকে জাগিয়ে না-তুলে বাংলাদেশ সরকারের উচিত যুদ্ধাপরাধের আসামি জামাতে ইসলামি নেতাদের সমঝোতার ম্যধ্যমে মুক্তি দেওয়া। একমাত্র বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলে, কাদের মোল্লার ফাঁসির বিষয়টি একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নিন্দা প্রস্তাব হবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ আলি কালই পাকিস্তানের হাই-কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে তাদের ওই কাজের কড়া প্রতিবাদ জানান। জানিয়ে দেন, আন্তর্জাতিক আদালতে স্বচ্ছ বিচার করে শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে একাত্তরে একের পর এক গণহত্যা ও ধর্ষণের এক আসামিকে। এ বিষয়ে পাকিস্তানের কিছুই বলার থাকে না।
কিন্তু পাকিস্তানের এই পদক্ষেপের নিন্দায় সরব হয়েছেন বাংলাদেশের নানা অংশের মানুষ। গণজাগরণ মঞ্চের প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী এ দিন পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে এসে স্লোগান দিতে থাকলে পুলিশ ব্যারিকেড গড়ে বাধা দেয়। অত্যুৎসাহী কিছু আন্দোলনকারী ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠি চালায়। এতে ছাত্রনেতা বাপ্পাদিত্য বসু-সহ পাঁচ জন আহত হন। এর পরে আন্দোলনকারীরা সেখানে বসে যান। চট্টগ্রাম, রাজশাহি ও খুলনায়ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান মানুষ। |