হুকিং ধরতে ভোরে হানা অগ্রদ্বীপে
বর ছিল, সূর্যাস্তের পর থেকে শুরু হওয়া কাজ চলে পর দিন সকাল পর্যন্ত। সেই খবরের ভিত্তিতে তিন দিন ধরে চালানো হয় নজরদারি। অবশেষে ভোরে অভিযান চালিয়ে চালকলে অবৈধ বিদ্যুত্‌ সংযোগ ছিন্ন করল পুলিশ।
বুধবার কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের পাশে সাহেবনগরে ওই চালকলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তিনটি মোটরবাইক। আরোহী পাঁচ জন। তার পরপরই সেখানে পৌঁছয় বিদ্যুত্‌ বণ্টন সংস্থার গাড়ি। তাতেও ছিলেন পাঁচ জন। তখন সবে আকাশে আলো ফুটছে। অভিযানে থাকা এক কর্মী জানান, তাঁরা গিয়ে দেখেন, ওই চালকলের সামনে বেশ কয়েক জন ক্রেতা দাঁড়িয়ে। হুক করে হাস্কিং যন্ত্রের সাহায্যে ধান থেকে চাল তৈরি চলছে। আশপাশের ব্যবসায়ীদের চেয়ে প্রায় অর্ধেক মূল্যে ধান ভাঙিয়ে দিচ্ছেন ওই চালকলের মালিক সাহের আলম শেখ। প্রকাশ্যেই লাল ও সবুজ, দু’রকম তার দিয়ে ৪৪০ কেভি বিদ্যুতের লাইন থেকে হুক করা হচ্ছিল। বিদ্যুত্‌ বণ্টন সংস্থার কর্মীদের থেকে জানা যায়, দফতরের কর্মীদের দেখে সাহের আলম নিজেই হুকের লাইন কেটে দেন। তার পরে বিদ্যুত্‌ কর্তারা বৈধ লাইন ছিন্ন করে মিটার নিয়ে চলে আসেন।
আটক মিটার।—নিজস্ব চিত্র।
বিদ্যুত্‌ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহের আলম হুক করে বিদ্যুত্‌ নিচ্ছেন, এই অভিযোগ জেনে সংস্থার দাঁইহাট বিভাগ তাঁকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। এর পরেই বিদ্যুত্‌ কর্তারা লোক লাগিয়ে তাঁর সম্পর্কে সবিস্তার খোঁজখবর শুরু করেন। বিদ্যুত্‌ কর্তাদের দাবি, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সূর্যাস্তের পর থেকে পর দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত দফায় দফায় হুকিং করে চালকল চালান ওই ব্যবসায়ী। দিনের বাকি সময়ে অবশ্য নিয়ম মেনেই ব্যবসা করেন। এ কথা জানার পরেই ভোরে অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়। বিদ্যুত্‌ বণ্টন সংস্থার দাঁইহাট দফতরের কর্তা ধ্রুবজ্যোতি মৈত্র বলেন, “গত তিন দিন ধরে সে কারণে ওই চালকলের মালিকের উপরে নজর রাখা হচ্ছিল।”
এ দিন ভোর ৪টে নাগাদ দাঁইহাটে ভাগীরথীর ঘাটে হাজির হন বিদ্যুত্‌ দফতরের কর্তা-কর্মী ও ভিজিল্যান্স বিভাগের কর্তা গোবিন্দ মুর্মু। তিনটি মোটরবাইক ও একটি গাড়িতে করে মোট ১০ জন ভাগীরথী পেরিয়ে পৌঁছন নদিয়ার নাকাশিপাড়ার মাটিয়ারিতে। সেখান থেকে দেবগ্রাম-বেথুয়াডহরি হয়ে এবড়োখেবড়ো পথ ধরে অগ্রদ্বীপ। সেখান থেকে সাহেবনগর। বিদ্যুত্‌ দফতরের ভিজিল্যান্স কর্তা গোবিন্দ মুর্মু বলেন, “হাস্কিং যন্ত্রের মোটর খুলে নেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ক্রেতারা সেই ঘর আটকে রেখেছিলেন। তা ছাড়া প্রায় শ’দেড়েক গ্রামবাসী জড়ো হয়ে যাওয়ায় আমরা চলে আসি।” পুলিশ ছাড়া অভিযানের ঝুঁকি কেন নেওয়া হল, সে প্রশ্নে ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, “মগরাহাটের ঘটনার পরে আর পুলিশ কার্যত পাওয়া যায় না। তাই আমরাও তল্লাশি চালাতে পারি না। ওই চালকলের মালিক হুকিং পাকড়াও করার ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ দিয়ে গিয়েছিলেন। তার পরেও পুলিশের অপেক্ষায় থাকলে ধরতে পারতাম না। তবে পুলিশকে জানিয়ে গিয়েছিলাম।” এ দিন দুপুরে কাটোয়া থানায় সাহের আলমের নামে এফআইআর করেন ধ্রুবজ্যোতিবাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.