মালদহের প্রাক্তন জেলাশাসক গোদালা কিরণকুমারের জামিন খারিজের আর্জি জানিয়ে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন শিলিগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলর সুজয় ঘটক। ঘটনাচক্রে, গোদালার জামিন খারিজের আর্জি জানিয়ে শিলিগুড়ি আদালতেও একটি আবেদন জমা পড়েছে। এদিন সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, মামলাকারীদের তরফে গোদালাকে বিশদে বিষয়টি জানিয়ে নোটিশ দিতে হবে। ওই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শিলিগুড়ি আদালতে মামলাটির পরের শুনানি আগামী ৯ জানুয়ারি। কলকাতা হাইকোর্টের মামলাটির শুনানি সামনের সপ্তাহে হতে পারে।
গত ৩০ নভেম্বর শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসজেডিএ) দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত গোদালাকে শিলিগুড়িতে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এসজেডিএ-এর প্রাক্তন কার্যনির্বাহী আধিকারিক তথা মালদহের তৎকালীন জেলাশাসক গোদালাকে শিলিগুড়ি আদালত প্রথমে পুলিশের আর্জি মেনে ৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। পরের দিন গোদালাকে আদালতে হাজির করায় পুলিশ। সেখানে জেরা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করে। সরকারি তরফেও জামনিনের বিরোধিতা করা হয়নি। এর পরে জামিনে মুক্তি পান গোদালা। সুজয়বাবুর আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এসজেডিএ-র দুর্নীতির সঙ্গে শাসক দলের অনেকে জড়িত বলে সন্দেহ। সেই কারণে গোদালার জামিন নিয়ে নানা সংশয়, সন্দেহ দানা বেঁধেছে। গোদালাকে সে ভাবে জেরা করলে আরও অনেকে সরাসরি জড়িয়ে যেতেও পারেন।” সুজয়বাবুই এর আগে হাইকোর্টে সিবিআইকে দিয়ে এসজেডিএ দুর্নীতির তদন্তের আর্জি জানিয়ে মামলা করেন।
এসজেডিএ-এর নানা প্রকল্পে অন্তত ৭০ কোটি টাকা নয়ছয়ের আশঙ্কায় গত মার্চে তদন্ত শুরু হয়। সংস্থার অভ্যন্তরীণ তদন্তের পরে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তা বিশদে জানানো হলে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশের কাছে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান পদ থেকে শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে সরিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে সেই দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ তদন্তে নেমে দু’জন ইঞ্জিনিয়ার সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। তদন্তের সময় এসজেডিএ-র সদস্য তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার সাংগঠনিক সভাপতি চন্দন ভৌমিক, শিলিগুড়ির তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার ও শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথবাবুকে জেরা করা হয়। একাধিক বার জেরা করা হয় গোদালাকেও। গত ২৯ ডিসেম্বর প্রথমে প্রায় ৭ ঘণ্টা জেরা করা হয় কিরণ কুমারকে। পর দিন বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই গ্রেফতারের দু’ঘণ্টার মধ্যেই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় কে জয়রামনকে।
|