জন্মদিনে তাঁর জন্মস্থানেই বিস্মৃত শিব্রাম
নিজের জীবন কাহিনিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি কখনওই কালজয়ী হতে চাইনি। এমনকী বিজ্ঞাপনের পৃষ্ঠাতেও নয়।’ যদিও নিজের লেখায় বাঙালি পাঠকদের শিশু, কৈশোর আর যৌবন কালকে সহজেই জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। কলকাতার অখ্যাত, মুক্তারামবাবু স্ট্রিটও তার লেখনীর কারণে বহুল পরিচিত। যদিও জন্মদিনে নিজের ভিটেতে উপেক্ষিত-ই থেকে গেলেন শিবরাম চক্রবর্তী। লেখায় নিজেকে যিনি পরিচয় দিয়েছেন ‘শিব্রাম’ বলেই।
লেখকের শৈশব, কৈশোর কেটেছে মালদহের চাঁচলে। যদিও আর পাঁচটা দিনের মতোই শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর লেখকের জন্মদিনটাও একই ভাবে কেটে গিয়েছে চাঁচলের। সরকারি বা বেসরকারি কোনও অনুষ্ঠান বা স্মরণসভা হয়নি। সিদ্ধেশ্বরী স্কুলে লেখক পড়তেন। সে স্কুলেও এ দিন কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। তবে প্রশাসনের তরফেও ভূমিপুত্র সাহিত্যিককে সম্মান জানানো হয় না কেন সে প্রশ্নও তুলেছেন সাহিত্যপ্রেমী এবং বাসিন্দারা। চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “আমাদের নির্দিষ্ট নিয়মের বেড়াজালে থেকে কাজ করতে হয়। ফলে ওই সাহিত্যিকের স্মরণে কোনও অনুষ্ঠান করতে হলে বাসিন্দাদেরকেই প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে সহায়তা করব।”
১৯০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল ‘হাসির রাজা’ হিসেবে পরিচিত পাওয়া শিবরাম-এর। আদতে তাঁরা ছিলেন মুর্শিদাবাদের নিমতিতার বাসিন্দা। শিবরামের মাসি ছিলেন চাঁচলের জমিদার ঈশ্বরচন্দ্রের স্ত্রী সিদ্ধেশ্বরীদেবী। তিন ভাইয়ের মধ্যে লেখক-ই বড়। বাবা শিবপ্রসাদের তেমন আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না। নিঃসন্তান মাসি সিদ্ধেশ্বরীদেবী ভগ্নিপতি শিবপ্রসাদকে চাঁচলে নিয়ে আসেন । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের হাত ধরে কিশোর বয়সেই চাঁচল ছেড়ে কলকাতায় যান তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামে কারাবরণও করেছিলেন তিনি।
পরে চাঁচলে আর না ফিরলেও তার রচনায় ঘুরেফিরে এসেছে চাঁচলের হাট, মাঠ, গ্রন্থাগার সহ নানা এলাকার কথা। জমিদারের রথ উপন্যাসে উঠে এসেছে চাঁচল রাজের দোষ ত্রুটির কথাও। চাঁচল সিদ্ধ্বেশ্বরী স্কুলে প্রধানশিক্ষক আসরারুল হক বলেন, “শিবরাম চক্রবর্তী এই স্কুলের ছাত্র হওয়ায় আমরা গর্বিত। তাঁর কোনও ছবি বা মূর্তি আমাদের কাছে নেই যে তার জন্ম বা মৃত্যু দিবসে তাকে শ্রদ্ধা জানাব। জানুয়ারি মাসে স্কুলের ১২৫ বছর পূর্তি উৎসব। ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আসবেন বলে প্রাথমিক সম্মতি মিলেছে। স্কুলের তরফে লেখকের আবক্ষ মূর্তি তৈরি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি এলে তাঁকে দিয়ে মূর্তির উদ্বোধন করা হবে। তারপর প্রতিবছর জন্ম ও মৃত্যু দিবসে তার স্মরণ অনুষ্ঠান হবে।”
চাঁচল উন্নয়ন মঞ্চের সভাপতি দেবব্রত ভোজও বলেছেন, “ওঁর নামে চাঁচলে কোনও রাস্তা বা দফতরের নাম রাখা যায় কি না তা দেখতে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.