|
|
|
|
থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন ডাক্তার, দাবি আইনজীবীর
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
গ্রেফতার নয়, চিকিৎসক সমীর বিশ্বাস পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে দাবি করলেন তাঁর আইনজীবী।
বুধবার রাতে আসানসোলের মহীশিলায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে সমীরবাবুকে ধরা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। কিন্তু শুক্রবার ধৃতের আইনজীবী দেবজ্যোতি বসুর দাবি, “সমীরবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। বুধবার রাতে তিনি নিজেই আসানসোল দক্ষিণ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।” যদিও ধৃতের আইনজীবির এই দাবি উড়িয়ে এ দিনও এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশ কুমার চাডিভে জানান, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই সমীরবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ইসিএলের প্রাক্তন চিকিৎসক, সাতষট্টি বছরের সমীরবাবুকে। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার আসানসোল আদালত ধৃতকে ছ’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় ধৃতকে জেরা করেছে পুলিশ ও কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্সের (সিআইএফ) আধিকারিকেরা। তবে এডিসিপি (সেন্ট্রাল) বলেন, “ওই চিকিৎসক এখনও পর্যন্ত বিশেষ কিছু জানাননি। শুধু জানিয়েছেন, অনেকেই তাঁর কাছে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। যে কোনও সময়ে যে কোনও ব্যক্তি তাঁর কাছে আসতে পারেন।” এখনও পর্যন্ত জেরায় নতুন কিছু মেলেনি বলে পুলিশের দাবি।
আসানসোল আদালতের বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন সমীরবাবুর সঙ্গে তাঁর আইনজীবি দেবজ্যোতিবাবু প্রতি দিন দেখা করতে পারবেন। সেই মতো শুক্রবার সকালে দেবজ্যোতিবাবু বেশ কিছুক্ষণ সমীরবাবুর সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার সমীরবাবুর ভাইপো বলে পরিচয় দিয়ে জনৈক যীশু বিশ্বাস দাবি করেছিলেন, সমীরবাবু আত্মসমর্পণ করেছেন। এ দিন দেবজ্যোতিবাবুরও দাবি, “সমীরবাবু কয়েক মাস ধরে আসানসোলের মহীশিলায় নিজের দাদার বাড়িতেই বসবাস করছিলেন। রাজ্যের এক মন্ত্রীর পরামর্শে মাস দুয়েক আগে হাইকোর্টে সমীরবাবুর অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য আবেদন করি আমরা। কিন্তু আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।” দেবজ্যোতিবাবু আরও দাবি করেন, বুধবার বিকেলে পুলিশের তরফে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ পরিবারের লোকেদের সঙ্গে নিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন সমীরবাবু। পুলিশ অবশ্য আইনজীবীর এই দাবি মানতে চায়নি।
২০১০ সালের ১৯ এপ্রিল বারাবনির পাঁচগাছিয়ায় যে খনি আবাসনে চিকিৎসক সমীরবাবু থাকতেন সেখানে পুলিশ অভিযান চালায়। সে দিন তাঁর পরিচারক সন্দীপ পালকে গ্রেফতার করলেও সমীরবাবুকে ধরতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের দাবি, সেই সময়ে সমীরবাবুর আবাসন থেকে মাওবাদী লিফলেট, পত্রিকা ইত্যাদি পাওয়া গিয়েছে। প্রায় তিন বছর পলাতক থাকার পরে গ্রেফতার হলেন এই বৃদ্ধ চিকিৎসক। বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও মহীশিলায় সমীরবাবুর দাদা সুভাষ বিশ্বাসের বাড়ি গিয়ে কারও দেখা পাওয়া যায়নি। বারবার ডাকাডাকি করা সত্ত্বেও কোনও সাড়া মেলেনি।
|
পুরনো খবর
• ডাক্তারবাবুকে দেখতে ভিড় জমল আদালতে
• মাওবাদী যোগের অভিযোগে ধৃত প্রৌঢ় চিকিৎসক |
|
|
|
|
|