একে জাতীয় সড়ক বেহাল। বেলা গড়ালেই রায়গঞ্জ থেকে শিলিগুড়িগামী বাসের দেখা মেলা ভার। শিলিগুড়ি যাতায়াতের ভরসা ছিল প্যাসেঞ্জার ট্রেন। এক সপ্তাহ ধরে রাধিকাপুর থেকে নিউ জলপাইগুড়িগামী একমাত্র ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিও দেরিতে চলছে। তা নিয়ে ভোগান্তির জেরে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।
ট্রেনটির প্রতিদিন সকাল সওয়া ৬টায় রাধিকাপুর স্টেশন ও ৬-৫০ মিনিটে রায়গঞ্জ স্টেশন থেকে ছাড়ার কথা। তার পরে সেটির ১২টা ৫ মিনিটে শিলিগুড়ি জংশন ও সাড়ে ১২ টায় এনজেপি স্টেশনে পৌছানোর কথা। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে ট্রেনটি বেলা সাড়ে ১০টা থেকে ১১ টার আগে রাধিকাপুর ও রায়গঞ্জ স্টেশন থেকে ছাড়ছে না বলে অভিযোগ।
গত ৯ মাস ধরে রায়গঞ্জ থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বেহাল। এইজন্য প্রতিদিন রায়গঞ্জ থেকে ৩০টির পরিবর্তে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৫টি বাস শিলিগুড়ি যাতায়াত করছে। দুপুর ১টার পরে রায়গঞ্জ থেকে শিলিগুড়িগামী বাস মেলে না। এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য তাই অন্যতম ভরসা ছিল প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি। কিন্তু সেই ট্রেনটিও অস্বাভাবিক দেরিতে চলায় শিলিগুড়ি যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে রায়গঞ্জ-সহ এক বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের কাছে। রায়গঞ্জ স্টেশনের কয়েক জন অফিসার জানান, রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ট্রেনটিতে ২ চালক ও ১ জন গার্ড রয়েছেন। রেল ওই ট্রেনে অতিরিক্ত চালক ও গার্ড নিয়োগ না করায় কর্তব্যরতরা বিশ্রাম করার সময় পাচ্ছেন না। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সেকারণেই ট্রেনটি মাঝেমধ্যে দেরিতে চলাচল করছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুণকুমার শর্মা বলেন, “প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি যাতে সঠিক সময়ে যাতায়াত করে তা দেখা হচ্ছে।”
রায়গঞ্জ থেকে গিয়ে ফের ট্রেনটির এনজেপি থেকে বিকাল পৌনে পাঁচটা ও শিলিগুড়ি জংশন থেকে সাড়ে ৫টা নাগাদ ছাড়ার কথা থাকলেও ওই দুই স্টেশন থেকে রাত ৮ বা ৮-৩০ টার আগে ট্রেনটি ছাড়ছে না। তাই শিলিগুড়ি থেকে ফিরতেও গভীর রাত হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে ১টা’র আগে ট্রেনটি রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ ও রাধিকাপুর স্টেশনে পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী ও পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত সোমের অভিযোগ, “ট্রেনটি এক সপ্তাহ ধরে দেরিতে চলায় যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা সঠিক সময়ে শিলিগুড়ি যাতায়াত করতে পারছেন না। শিলিগুড়ি থেকে গভীর রাতে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ ও রাধিকাপুর স্টেশনে নেমে যাত্রীরা নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন।” তাঁদের ক্ষোভ, “দ্রুত ট্রেনটি স্বাভাবিকভাবে না চললে রেল অবরোধ করা হবে।”
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, যাত্রীদের সমস্যার কথা জানিয়ে কিছুদিন আগে দলের তরফে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে ওই ট্রেনটিতে অতিরিক্ত চালক ও গার্ড নিয়োগ করে সঠিক সময়ে চালানোর দাবি জানানো হয়েছে। |