ডিসলেক্সিয়া নিয়ে দিশা দেখাতে আলোচনাসভা
ছেলেটা ছবি আঁকত। ছেলেটা খেলাধুলো করত। ছেলেটা জমা জল থেকে মাছ ধরত। ছেলেটা স্কুলেও যেত। কিন্তু পড়াশোনা ভাল লাগত না তার, পারতও না। জুটত শাস্তি, বকুনি। বাড়ি ছেড়ে যেতে হল বোর্ডিং স্কুলে। সে এক আতঙ্কের পরিবেশ। ভয়ের আবহে দিন কাটানো। অবশেষে স্কুলে এলেন এক শিক্ষক, যিনি ছেলেটার সমস্যা বুঝে তার মতো করেই সেটার সমাধান করলেন। ‘তারে জমিন পর’-এর ঈশান ফিরল স্বাভাবিক ছন্দে।
কিন্তু বাস্তবে ক’জন ঈশান আর রামশঙ্কর নিকুম্ভের মতো শিক্ষক পায়? বিচ্ছিরি হাতের লেখায় উল্টো অক্ষর, নোংরা, ভুলে ভরা খাতাগুলো দেখে ক’জন শিক্ষক এবং ক’জন অভিভাবকই বা চিনে নিতে পারেন ঈশানদের? ক’জন বোঝেন যে, তারা আসলে ‘ডিসলেক্সিয়া’র শিকার?
ছেলেমেয়েদের এই সমস্যা নিয়ে কর্মরত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর কলকাতায় তিন দিনের আলোচনাসভার আয়োজন করেছে। এই সমস্যাকে চিহ্নিত করে কী ভাবে তার সমাধানের পথ বার করা যায়, আলোচনাসভার প্রতিপাদ্য এটাই। আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, দেশের নামজাদা মনস্তত্ত্ববিদ, মানসিক অসুস্থতা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা থাকবেন আলিপুরের ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ওই সভায়। থাকবেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকেরাও।
আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অরুণা ভাস্কর জানান, সাধারণ বা তার থেকে বেশি বুদ্ধিমান অনেক বাচ্চাও ডিসলেক্সিয়ার শিকার। তিনি বলেন, “দেখা যাচ্ছে, স্কুলপড়ুয়াদের প্রত্যেক আট জনের মধ্যে এক জন ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত।” এই সমস্যায় যারা ভোগে, তারা সাধারণত অক্ষরগুলিকে উল্টো দেখে। সমস্যা কাটাতে চলতি পদ্ধতি থেকে কিছুটা সরে এসে একটু যত্নবান, একটু বেশি স্নেহশীল হলেই অনেকটা কাজ হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। ‘তারে জমিন পর’-এর নিকুম্ভ স্যার যেটা হতে বা যা করতে পেরেছিলেন।
অলাভজনক ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আয়োজিত তিন দিনের আলোচনাসভায় রাজ্যের বোর্ডের অধীন স্কুলের সঙ্গে সঙ্গে সিবিএসই, আইসিএসই বোর্ডের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও উপস্থিত থাকবেন। অরুণা বলেন, “কার সমস্যা কতটা প্রবল, সাইকোমেট্রিক পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে। সকলের ক্ষেত্রে প্রয়োজন না-হলেও সমস্যা বেশি গভীর হলে দরকার পড়ে বিশেষ সাহায্যের।”
অনেক স্কুলপড়ুয়ার মধ্যে এই সমস্যা তো আছেই। আবার ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত খ্যাতনামাদের তালিকাটাও বেশ বড়। আইনস্টাইন, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, পাবলো পিকাসো, স্টিভ জোবস থেকে অভিষেক বচ্চন অনেকেই এর শিকার। তাই এই ধরনের শিশুদের সমস্যা বুঝে তাদের একটু সাহায্য করলে ডিসলেক্সিয়ার কবল থেকে মুক্ত হওয়া খুব একটা কঠিন নয় বলে মনে করে ‘ব্রেকিং থ্রু ডিসলেক্সিয়া’।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.