ভাইয়ের সঙ্গে বকেয়া মজুরি নিয়ে বিবাদের জেরে বাড়িতে ঢুকে দিদিকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার সকালে ফালাকাটার জটেশ্বর ২ পঞ্চায়েতের কাঁঠালবাড়ি গ্রামের এই ঘটনায় সাত প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ধর্ষণ করার পর ওই তরুণী বধূ ও তাঁর মাকে মারধরও করা হয়। দুষ্কৃতীরা বাড়ি ছাড়ার আগে ওই বধূকে বাড়ির একটি কদম গাছে বেঁধে রাখা হয়। তিন ঘণ্টা বাদে লোকজন খবর পেয়ে ওই মহিলাকে উদ্ধার করেন। অসুস্থ মহিলাকে ফালাকাটা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ফালাকাটার ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন রুদ্র বলেন, “ওই বধূর মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষা করা হচ্ছে।” আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া জানান, এ দিন সন্ধ্যায় সাত জনেরর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ জমা পড়েছে। দিনমজুরির টাকা না মেটানো নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। অভিযুক্তদের খোঁজা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফালাকাটার নয় মাইল গ্রামের এক কৃষকের সঙ্গে বছর সাতেক আগে দিনমজুর পরিবারের ওই যুবতীর বিয়ে হয়। তাঁর চারটি শিশু কন্যা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি কাঁঠালবাড়িতে বাপের বাড়িতে আসেন। বাপের বাড়িতে তাঁর বাবা, মা এবং এক ভাই রয়েছে। বাবা ও ভাইও দিনমজুরি করে সংসার চালান। মাস খানেক আগে তাঁর ভাই প্রতিবেশী এক জনের জমিতে দিনমজুরির কাজ করেন। অভিযুক্ত প্রতিবেশীর কাছে তিনি পাঁচ হাজার টাকা পেতেন। তিন দিন আগে বকেয়া মেটানো নিয়ে বচসা হয়।
গত মঙ্গলবার বিকালে ওই বধূর ভাই প্রতিবেশী এক জমির মালিকের কাছে ফের তাঁর বকেয়া টাকা চাইতে যান। সে সময় ফের দু’জনের মধ্যে বচসা ও মারপিট হয়। প্রতিবেশী দলবল নিয়ে বুধবার রাতে তাঁরা বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর করতে পারেন, এই খবর পেয়ে তিনি রাতেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। ওই বাড়িতে অভিযোগকারী মহিলা এবং তাঁর মা ছিলেন। অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তি রাতে সঙ্গীদের নিয়ে ওই বাড়িতে ঢুকে হুমকি দেন। মহিলার ভাইকে না পেলে বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া বলে হুমকিও দিয়ে যান বলে অভিযোগ।
ওই বধূর অভিযোগ, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ ওই ব্যক্তি দলবল নিয়ে ফের চড়াও হয়। প্রথমে মাকে লাঠিপেটা করা হয়। তার পরে তাঁকে খাটের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে পরপর পরপর সাত জন ধর্ষণ করেন। তারপর দু’জনকে মারধর করে বাড়ির পিছনে কদম গাছে বেঁধে রাখা হয়। ওই নির্যাতিতার কথায়, “কোলের সন্তানকে ফেলে দিয়ে খাটে বেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে। বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়।” এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য চন্দ্রমোহন বর্মন বলেন, “ওই যুবতীর ভাই দিনমজুরির টাকা বেশি চাইছিল। এ নিয়েই বিবাদ। ওই জমির মালিকের ছেলেটির বাড়িতে লোকজন নিয়ে ঢুকে পরিবারটিকে মারধর করেছেন বলে শুনেছি।” |