গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বনগাঁর পাইকপাড়া অঞ্চল থেকে এক অস্ত্র পাচারকারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার রাতের ওই ঘটনায় ধৃতের কাছ থেকে ২৬ কিলোগ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয়েছে। ধৃতের নাম জামাল মণ্ডল, বাড়ি ভাসানপোতা এলাকায়।
পুলিশের দাবি, বছর ত্রিশের জামাল বাংলাদেশে বেআইনি অস্ত্র পাচারের কারবার চালায়। বিহারের মুঙ্গের থেকে সীতাকুণ্ড গ্রাম থেকে বেআইনি ওই আগ্নেয়াস্ত্র আসে। জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে সে কখনও ব্যান্ডেল, কখনও বা বর্ধমানে নেমে ওই অস্ত্র নিয়ে আসতে হত। চড়ুইগাছি খলিতপুর এলাকায় আগে থেকে বাংলাদেশী কারবারিরা নির্দিষ্ট সময়ে এসে তার কাছ থেকে বেশি দামে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যেত। তার মধ্যে ছিল অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রও। বাংলাদেশি ছাড়াও অন্যান্য জেলার দুষ্কৃতীরাও তার কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র কিনে নিয়ে যেতেন। অতীতে নদিয়ার নাকাশিপাড়া ও তাহেরপুর থেকে সে অস্ত্র-সহ একাধিকবার গ্রেফতারও হয়েছে। তবে জামিন পেয়ে গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, জেরায় জামাল স্বীকার করেছে, সীতাকুণ্ড গ্রামে ঘরে ঘরে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হয়। সরকারি কারখানায় যারা দীর্ঘদিন অস্ত্র তৈরি করেন, অবসরের পরে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিত তারা।
কয়েক বছর আগে বনগাঁ শহর থেকে পুলিশ কয়েক জন আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিকে বেশ কিছু ৯ এমএম পিস্তল-সহ গ্রেফতার করেছিল। তখন তাঁদের কাছ থেকেও বিহার থেকে বনগাঁয় অস্ত্র পাচারের কথা শোনা যায়। ধরপাকড় শুরু হতে কিছু দিন পাচার বন্ধ থাকে। জামালের গ্রেফতারের পরে ফের প্রমাণিত হল, ফের বনগাঁ সীমান্তবর্তী এলাকায় অস্ত্র পাচার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, সীমান্তের গ্রামগুলিতে অস্ত্র মজুত করা হচ্ছে। ছোটখাটো দুষ্কৃতীরাও সহজে হাতে অস্ত্র পেয়ে যাচ্ছে। অপরাধের সংখ্যাও বাড়ছে। কাঁটাতারের বাইরে যারা খেতে কাজ করেন, তাঁদের পাচারের কাজে ব্যবহার করছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানাচ্ছে, জামালের কাছ থেকে চক্রের অন্যদের হদিস পাওয়া যেতে পারে।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার রাতে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে এক বাংলাদেশী সুপারি কিলারকে ধরেছে পুলিশ। তার কাছ থেকে ১ রাউন্ড গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তার বাড়ি বাংলাদেশের সাদিপুরে। সম্প্রতি পেট্রাপোলেই থাকত সে। পুলিশের দাবি, জেরায় সে স্বীকার করেছে, কয়েক বছর আগে স্থানীয় জয়ন্তীপুরের এক জনকে খুনের ঘটনায় সে জড়িত। এ বার কী উদ্দেশ্যে সে এখানে এসেছিল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। |