বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করে দুই স্কুলছাত্রীর অপহরণের চেষ্টা রুখল গ্রামবাসীরা। স্বরূপনগরের কৈজুড়ি সীমান্তে বুধবার দুপুরে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা দুই ছাত্রীকে যখন তুলে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন তাদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। বেগতিক দেখে দুষ্কৃতীরা ওই দুই ছাত্রীকে নো ম্যানস ল্যাণ্ডে ফেলে ওপারে পালিয়ে যায়। গ্রামবাসীর অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের ধরতে গেলে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা (বিজিবি) তাঁদের বন্দুক উঁচিয়ে হুমকি দেয়। এই ঘটনায় কৈজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামলী গাইন নিরাপত্তার দাবিতে বিএসএফের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় বিএসএফ এবং বিজিবি-র মধ্যে এ বিষয়ে ফ্ল্যাগ মিটিংও হয়। বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা জানিয়েছেন একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তবে দুষ্কৃতীদের ছাড়া হবে না বলে বিজিবি আশ্বাস দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত এক বছরে এই সীমান্তেই বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হামলায় এক জওয়ান ও এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সম্প্রতি গার্বডা ও হাকিমপুরে বিএসএফ-এর চৌকি ভাঙচুর, সাতজন মহিলার শ্লীলতাহানি ও অপহরণের চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পর পর এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় উদ্বিগ্ন সীমান্ত এলাকার মানুষ।
পুলিশ, বিএসএফ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, ষষ্ঠ শ্রেণির ওই দুই ছাত্রীর এ দিন কর্মশিক্ষার পরীক্ষা ছিল। দুপুর দেড়টা নাগাদ পরীক্ষা শেষে তারা বাড়ি ফিরছিল। সীমান্ত লাগোয়া দবিলা এবং কৈজুড়ির মাঝে ফাঁকা মাঠ পার হওয়ার সময়ে তিন দুষ্কৃতী তাদের পথ আটকায়। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাদের ঝোপে টেনে নিয়ে গিয়ে একজনের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। সেই সময় সুযোগ বুঝে আর এক ছাত্রী চিৎকার করলে আশপাশের গ্রামবাসীরা ছুটে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দা কালিপদ মণ্ডল বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে থাকা শ্মশানে সেই সময় কয়েকজন মৃতদেহ পোড়ানোর কাজে ছিলেন। সবাই দৌড়ে এলে দুষ্কৃতীরা দুই নাবালিকাকে কাঁধে তুলে সীমান্তের দিকে পালানোর চেষ্টা করে।” দু’দেশের মধ্যে ওই জায়গায় একটি শুকনো খাল ছাড়া কোনও কাঁটাতার নেই। ফলে দুষ্কৃতীরা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারে বুঝে গ্রামের মানুষ দু’পারের রক্ষীদের সজাগ করতে চিৎকার শুরু করেন। তা দেখে দুষ্কৃতীরা দুই নাবালিকাকে ফেলে পালায়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের তাড়া করার সময়ে বিজিবি-র পক্ষ থেকে গুলি চালানোর হুমকি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে বাসিন্দারা সোচ্চার হলে কৈজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামলী গাইন কৈজুড়ি বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে ১৫২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের বৈঠক হয়।
শ্যামলীদেবী বলেন, “বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের অত্যাচারে সীমান্তবাসী অতিষ্ঠ। এ পারে এসে তারা মহিলাদের উপরে অত্যাচার করছে। বিএসএফকে সব জানানো হয়েছে।”
চার অনুপ্রবেশকারী ধৃত। চার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করল বাগদা থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম অভিজিৎ মণ্ডল, সন্ন্যাসী মণ্ডল, মানিক সর্দার ও মহসিন মণ্ডল। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের পাবনা ও শিলাইদহ জেলায়। স্থানীয় আষাড়ু বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বইতে কাজের উদ্দেশ্যে তারা দালালকে টাকা দিয়ে এ দেশে ঢুকেছিল। |