সভার ২৪ ঘণ্টা আগে জেলা সমাবেশের স্থান বদলে দেওয়ায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখাল সিটু। জেলা প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ জেলা সিটুর পক্ষ থেকে বহরমপুর শহরে বিক্ষোভ মিছিলও করা হয়। সিটুর দাবি, জেলা প্রশাসনের আগাম অনুমতি নিয়ে বহরমপুর কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে বৃহস্পতিবারের তাঁরা জেলা সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা আগে সেখানে মাইক বাজিয়ে সভা করতে দেওয়া হবে না বলে বহরমপুর মহকুমাশাসকের পক্ষ থেকে সিটুর জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তড়িঘড়ি স্থান বদল করে এ দিন সমাবেশ করা হয় এফইউসি মাঠে।
সিটুর দাবি, প্রশাসন পক্ষপাত করছে, তৃণমূলকে ওই একই জায়গায় মাত্র কয়েকদিন আগেই সভা করতে দেওয়া হলেও সিটুকে তা দেওয়া হল না। সিটুর রাজ্য সম্পাদক দীপক দাশগুপ্ত বলেন, “প্রশাসনিক ভবনের সামনে তৃণমূলকে সভা করতে দেওয়া হয়। কিন্তু সিটুকে দেওয়া হল না।” বহরমপুর মহকুমাশাসক অধীর বিশ্বাস বলেন, “মাইকের আওয়াজে প্রশাসনিক ভবনে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই গত বুধবার থেকে প্রশাসনিক ভবন চত্বরের ২০০ মিটারের মধ্যে মাইক বাজানো যাবে না বলে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশের কথা বুধবার সব রাজনৈতিক দলকে জানানো হয়েছে। তাই এ দিন গাঁধী মূর্তির পাদদেশে সভা করতে দেওয়া হয়নি।”
কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবন থেকে ১০০ মিটার দূরে মুর্শিদাবাদ জেলা সন্তরণ সংস্থার সুইমিং পুলস সেখানে গত মঙ্গলবার তৃণমূল যুবার জেলা সমাবেশে করা হয়। ওই প্রসঙ্গ তুলে সিটুর জেলা সম্পাদক তুষার দের কটাক্ষ “দু’দিন আগে তৃণমূল যুবার সমাবেশের মাইকের আওয়াজে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনের কাজকর্ম কি তা হলে ব্যাহত হয়নি?” তুষারবাবু বলেন, ‘‘পুরনো কালেক্টরেট মোড়ে সভা সামাবেশ করা যাবে না বলে বছর দু’য়েক আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুরনো কালেক্টরেট মোড়ের বদলে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে সভা সমাবেশ করতে হবে বলে ওই দিনই প্রশসানের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো গাঁধী মূর্তির পাদদেশে এ দিনের সমাবেশ করা হবে বলে প্রশাসনের কাছ থেকে গত ৮ নভেম্বর অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তারপর হঠাৎ সমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগে সেই অনুমতি বাতিল করে দিয়ে অগণতান্ত্রিক আচরণের নজির গড়ল প্রশাসন।”
তৃণমূলের জেলা নির্বাহী সভাপতি হুমায়ুন কবীর অবশ্য বলেন, “প্রশাসনিক ভবন থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে মাইক বাজিয়ে সভা করায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বুধবার থেকে। আমরা তার আগেই সভা করেছি। ভবিষ্যতে ওই নিষেধাজ্ঞা মেনেই সভা করা হবে।” তাঁর বক্তব্য, “জেলা প্রশাসন তার নিজের মতো করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নিয়ে শাসক দলের সঙ্গে প্রশাসনের কোনও সম্পর্ক নেই।”
|