শিক্ষক মাত্র এক জন, ৬৫টি স্কুলে
বন্ধ হয়েছে মিড ডে মিলের বরাদ্দ
ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা যা-ই হোক, স্থায়ী শিক্ষক মাত্র এক জন হওয়ায় বন্ধ মিড-ডে মিলের বরাদ্দ টাকা।
স্কুল শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশে (মেমো নম্বর-৭০৭-এসই ইই আইওএম-১৭৭/২০১৩) ফাঁপরে পড়েছে হাওড়া জেলার ৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কেননা, ওই স্কুলগুলিতে শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র এক জন। কোনও স্কুলে এক মাস, কোনও স্কুলে দু’মাস, কোন স্কুলে বা সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড ডে মিল। শিক্ষকদের আশঙ্কা, বাড়তি শিক্ষক তাড়াতাড়ি নিয়োগ না হলে গত জুলাই মাসে জারি হওয়া ওই নির্দেশিকার জেরে স্কুলগুলি থেকে পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পুলককান্তি দেব জানিয়েছেন, মিড ডে মিল নিয়ে আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ যাতে না ওঠে, সেই কারণেই এক জন শিক্ষক রয়েছেন, এমন স্কুলগুলির জন্য ওই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। জেলায় ওই রকম স্কুলের সংখ্যা ৬৫। ছ’বছর ধরে প্রাথমিকে কোনও শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক স্কুলেই যে এ জন্য ইতিমধ্যে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তা মেনে নিয়ে তাঁর আশ্বাস, “শিক্ষক সমস্যার সমাধান ছাড়াও আমরা চেষ্টা করছি গ্রাম শিক্ষা কমিটিতে মহকুমাশাসক, বিডিও বা সরকারি আধিকারিকদের যুক্ত করে মিড-ডে মিল সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে।”
শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে জেলার বহু প্রাথমিক স্কুলই। তার মধ্যে ৬৫টি এক-শিক্ষক স্কুলে আর সব কাজের সঙ্গে সঙ্গে মিড ডে মিলের কাজও চালিয়ে আসছিলেন ওই শিক্ষক। পঠনপাঠন ছাড়াও তাঁর কাজের মধ্যে ছিল পাঠ্যবই বিতরণ, প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং স্কুলের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত দায়িত্বও। পড়ার সুবিধার জন্য কিছু স্কুলে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক দায়িত্ব স্থায়ী শিক্ষকের।
১৮ জুলাই স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে জারি হওয়া ওই নির্দেশে বলা হয়, দু’জন শিক্ষক বা শিক্ষিকা না থাকলে মিড-ডে মিলের টাকা তোলা যাবে না। তাতেই হয়েছে সমস্যা।
দক্ষিণ সাঁকরাইলের দক্ষিণ মহিয়াড়ি পঞ্চায়েতের চাঁদনিবাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৩। বহু দিন ধরে এখানে একাই স্কুল চালাচ্ছেন শিক্ষিকা মঙ্গলা ঘোষ। দিন কয়েক আগে স্কুলে এক জন অস্থায়ী শিক্ষক এসেছেন। কিন্তু সরকারি ওই নির্দেশিকার জন্য কয়েক মাস ধরে স্কুলটি মিড-ডে মিলের বরাদ্দ টাকা পাচ্ছে না। কয়েক মাস নিজের চেষ্টায় পড়ুয়াদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছেন মঙ্গলাদেবী। কিন্তু নভেম্বর মাস থেকে তা-ও বন্ধ। মঙ্গলাদেবীর কথায়, “নানা ভাবে চেয়েচিন্তে এত দিন মিড ডে মিল চালিয়েছি। কিছু দিন ধরে আর চালাতে পারছি না। তাই বন্ধ করে দিতে হয়েছে মিড-ডে মিল।”
উত্তর মহিয়াড়ি খটিরবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে ৫২ জন। ২০১১ সালের মার্চ থেকে একমাত্র শিক্ষিকা রিনা নন্দী মিড-ডে মিল চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় নভেম্বর মাস থেকে এখানেও বন্ধ মিড-ডে মিল। রিনাদেবী বলেন, “ধার করে কয়েক মাস চালালাম। আর সম্ভব হচ্ছে না। গরিব শিশুগুলির মুখের দিকে তাকালেও খারাপ লাগে।” একই অবস্থা এক শিক্ষকের অন্য প্রাথমিক স্কুলগুলিরও।
ডোমজুড়ের বিডিও তমোঘ্ন কর বলেন, “মিড-ডে মিলের অর্থ বরাদ্দ এলে সব সময়েই তা প্রাধান্য দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারি নিয়ম-নীতির কারণে অনেক স্কুল তা পায় না। এই ব্লকেও ৫-৭টি এক শিক্ষকের স্কুলে এ নিয়ে সমস্যা হচ্ছে।”ওই স্কুল দু’টি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ডোমজুড়ের বাঁকড়া চক্রের অধীনে। ওই চক্রের স্কুল শিক্ষা পরিদর্শক সৌরভ পাল জানিয়েছেন, সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.