সংসদে কারজাইয়ের বক্তৃতা বাতিল

১২ ডিসেম্বর
ণতান্ত্রিক ভারত তাঁদের কী শিক্ষা দিয়েছে, তা এ দেশের সাংসদদের জানাবেন বলে এসেছিলেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। কিন্তু বলবেন যাঁদের, সেই সাংসদেরাই তো অনুপস্থিত থাকবেন! তাই বাধ্য হয়ে বাতিল করে দিতে হল অনুষ্ঠান। যার ফলে চার রাজ্যে বিধানসভা ভোটে হারের রেশ কাটতে না কাটতে আরও একটি নতুন অস্বস্তির মুখে মনমোহন সিংহ সরকার।
কাল সংসদের সেন্ট্রাল হলে হীরেন মুখোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল কারজাইয়ের। কিন্তু রাজ্যসভা ও লোকসভা মিলিয়ে প্রায় আটশো সাংসদের মধ্যে শুক্রবার মাত্র কুড়ি জন উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন! ফলে সংসদ কার্যত ফাঁকা থাকার সম্ভাবনায় শেষ পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংসদ সচিবালয়।
কেন এই অবস্থা? তৃণমূল বা সপা’র মতো আঞ্চলিক দলগুলি এর জন্য শুক্রবার দিনটিকে বক্তৃতার জন্য বেছে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকেই দায়ী করেছেন। তৃণমূলের এক সাংসদ বলেন, “শুক্রবার লোকসভায় প্রাইভেট মেম্বার বিল (অর্থাৎ, মন্ত্রিসভায় নেই, এমন সাংসদদের আনা বিল) পেশ হয়। তাই ওই সাংসদরা বাদ দিয়ে বাকিদের অধিকাংশই খুব দরকার না থাকলে দুপুরের অধিবেশনের পর নিজের নিজের কেন্দ্রে ফিরে যান। শুক্রবার রাজ্যসভাতেও দুপুরের পরে বিশেষ কোনও কর্মসূচি থাকে না। ফলে ওই দিনটি বাছা উচিত হয়নি।” সপা নেতা নরেশ অগ্রবালের বক্তব্য, “তেলঙ্গানা, কপ্টার দুর্নীতির মতো একাধিক বিষয়ে শোরগোল হওয়ায় সংসদ বারবার বন্ধ করে দিতে হচ্ছে সরকারকে। সরকারকে সহযোগিতা করা নিয়েও দলগুলির মধ্যে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। যে কারণে কংগ্রেসের উদ্যোগে সাড়া দেয়নি অন্য দলগুলি।”
বিজেপি শিবির অবশ্য বক্তৃতা বাতিল নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি। তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলছেন, পাকিস্তানের মাটি যখন ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে ব্যবহার করা হচ্ছে, তখন দেশের স্বার্থেই আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলা দরকার। কিন্তু এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্তরেও বিড়ম্বনায় পড়তে হল দিল্লিকে। বিজেপি সাংসদ প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে কংগ্রেসের ২৭৬ জন সাংসদ। সনিয়া গাঁধী হুইপ দিলেই অন্তত দু’শো সাংসদ হাজির থাকতেন। তা হলেই অস্বস্তিতে পড়তে হত না সরকারকে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, শুধু দেশের উপরেই নয়, নিজেদের সাংসদদের উপর থেকেও কর্তৃত্বের রাশ আলগা হয়েছে কংগ্রেসের।”
আগামী বছর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর কাবুলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুনর্গঠন প্রকল্পে বড় ভূমিকা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের। একই চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তানও। এই রকম একটি স্পর্শকাতর সময়ে আফগান প্রেসিডেন্টের বক্তৃতা বাতিল হওয়া নিয়ে সাউথ ব্লকের ব্যাখ্যা ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের যা সম্পর্ক, তাতে কেন্দ্র চায়নি দ্বিপাক্ষিক কোনও বিষয়ে সামান্যতম ভুল বার্তা যাক। কারজাই যদি ফাঁকা সংসদে বক্তৃতাদিতেন, তা হলে কূটনৈতিক স্তরে আরও অস্বস্তিকর হত। তাই কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। সাংসদদের অনুপস্থিতির বিষয়টি জানার পরেই তড়িঘড়ি গোটা অনুষ্ঠানটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কারজাইয়ের দ্বিপাক্ষিক অন্যান্য কর্মসূচি বহাল রাখা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.