কলকাতায় এসেছিলেন স্বামীর খোঁজে। ঢুকতে হয় জেলে। তবে এত দিনে স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হতে পারে। সেই জন্য তাঁকে তিহাড় জেলে পাঠিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন মায়ানমারের বাসিন্দা জহুরা বেগম। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছে।
২০০৯ সালে সাত সন্তানকে নিয়ে স্বামীর খোঁজে বাংলাদেশ হয়ে কলকাতায় আসেন জহুরা। তাঁকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গ্রেফতার করে বিধাননগর থানার পুলিশ। তাঁর ঠাঁই হয় দমদম সেন্ট্রাল জেলে। সন্তানেরা জায়গা পায় একটি হোমে। জহুরা বেগম যখন কলকাতায় জেল খাটছেন, তাঁর স্বামী মহম্মদ ইয়াকুব উদ্বাস্তু হিসেবে ভারতে আসার অনুমতি পান। তাঁর স্থান হয় জম্মুতে রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু শিবিরে।
বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে এর মধ্যেই এক বার কলকাতায় এসে দমদম জেলে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ইয়াকুব। ফেরার সময় সন্তানদের নিয়ে যান জম্মুতে। তার পর থেকে জহুরা বেগম এই শহরে একা। ইতিমধ্যে তাঁর জেলজীবনের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তবু দমদম জেলেই রয়ে গিয়েছেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে মায়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু স্বামী ও সন্তান যে রয়েছেন জম্মুতে! এই অবস্থায় তিহাড় জেলে থাকার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ওই মহিলা। তাঁর আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আবেদনে বলা হয়, তিনি তিহাড় জেলে থাকলে তাঁর স্বামী সহজেই জম্মু থেকে দেখা করতে আসতে পারবেন। কারণ, দমদমের তুলনায় জম্মুর দূরত্ব অনেক কম। তিহাড় জেলে থাকলে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগও মিলতে পারে। তা ছাড়া ‘ইউনাইটেড নেশন হাই কমিশন অব রিফিউজি’র অফিস দিল্লিতে হওয়ায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগেরও সুবিধা হবে। সব শুনে জহুরা বেগমের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার জহুরা বেগমের প্রতি সহানুভূতিশীল। তিহার জেলে পাঠালে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি জহুরা বেগমকে রাজ্য সরকারের তত্বাবধানে অবিলম্বে তিহার জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। |