সমকামী বিয়ে অবৈধ অস্ট্রেলিয়াতেও

১২ ডিসেম্বর
ভারতের পরেই অস্ট্রেলিয়া।
সমকামী বিয়ের আইনি বৈধতার প্রশ্নে প্রায় একই পথে হাঁটল দু’দেশের শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, সমকামী বিয়ে বেআইনি। সম্প্রতি ‘অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি’ বা এসিটির আইনসভা সমকামী বিয়েতে বৈধতা দিয়ে আইন পাশ করেছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার তার বিরোধিতা করে হাইকোর্টে যায়। আজ সেই মামলারই রায় শুনিয়েছে অস্ট্রেলীয় হাইকোর্ট। সমকামী বিয়েকে বেআইনি বলার পাশাপাশি হাইকোর্ট এ-ও বলেছে, বিয়ে সংক্রান্ত আইন নিয়ে যা কিছু পরিবর্তন, তা শুধু অস্ট্রেলীয় পার্লামেন্টই করতে পারে।
হঠাৎ কেন এসিটি-র বিবাহ আইনের বিরোধিতা করল ফেডারেল সরকার? আসলে তাঁদের মতে, ফেডারেল বিবাহ আইনের সঙ্গে এসিটি-র এই আইন মোটেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল আইনে পুরুষ ও নারীর বিবাহ সম্পর্ককেই বৈধতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অক্টোবরে সমকামী বিয়েকে বৈধ স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাশ করে এসিটির আইনসভার নিম্মকক্ষ। আর সেই আইন অনুসারে রাজধানী ক্যানবেরা এবং তৎসংলগ্ন এলাকায়(যা কি না এসিটির অন্তর্ভুক্ত) স্বীকৃতি পায় সমকামী বিয়ে। ওই আইনের জোরেই গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২৭ জন সমকামী দম্পতি বিয়ে সেরেছেন। হাইকোর্টের রায়ের পরে বৈধতা হারালেন সেই সব সদ্যবিবাহিত সমকামী দম্পতিরা।
বৈধ নয় বিয়ে। রায় শোনার পর অস্ট্রেলীয় হাইকোর্টের বাইরে
এক সমকামী দম্পতি। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।
এ দিন রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাইকোর্ট চত্বরে জড়ো হওয়া সমকামীদের অনেকেই। এসিটি আইনের আওতায় গত সপ্তাহেই বিয়ে সেরেছিলেন ইভান হিন্টন এবং ক্রিস টিও। বিয়ের সাত দিন কাটতে না কাটতেই ফের আইনের সুতোয় ঝুলে গেল তাঁদের সম্পর্ক। কোনও মতে চোখের জল আটকে ইভান বললেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে বিবাহিতও হলাম, আবার অবিবাহিতও হয়ে গেলাম।” ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার আইনসভার এমপি স্টিফেন ডসন আবার তাঁর দীর্ঘদিনের সঙ্গীকে বিয়ে করেছেন শনিবার। এই রায়ের পর তাঁর দাম্পত্যের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত।
তবে সাময়িক ভাবে ভেঙে পড়লেও মোটেও দমছেন না তাঁরা। অধিকার ফিরে পেতে নতুন করে আন্দোলন শুরুর কথা ভাবছেন। যেমন ক্যানবেরার নারেল মাজিক এবং অ্যাশ ওয়াটসন। গত কালই বিয়ে করেছিলেন দু’জনে। আর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের বিয়ের কোনও বৈধতা নেই। তাতে অবশ্য হেলদোল নেই অ্যাশের। বললেন, “আগের থেকে কিছু আলাদা লাগছে না।” হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁদের মতোই আরও বহু সমকামী দম্পতি বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই রায়ে তাঁদের কিছু যায় আসে না। কেউ বা আবার বিয়ের সার্টিফিকেট এবং আংটি দেখিয়েছেন এটা বোঝাতে, রায়ের পরও কিছু বদলাবে না।
কিন্তু এর পর অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল আইন বদলাবে কি? পার্লামেন্ট কি মানবে সমকামী বিয়ে? সরকারের প্রতিক্রিয়া অবশ্য তা বলছে না। অ্যাটর্নি জেনারেল জর্জ ব্র্যান্ডিস বলেন, “এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।” আর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট যে সমকামী বিয়ের কট্টর বিরোধী, তা ইতিমধ্যেই বহুল প্রচারিত। তা ছাড়া, তথ্য এ-ও বলছে, গত বছর এই সংক্রান্ত একটি বিল অস্ট্রেলীয় পার্লামেন্টের দু’কক্ষেই প্রত্যাখ্যাত হয়। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ফেডারেল সরকার সমকামী দম্পতিদের বিয়েকে বৈধতা দেওয়ার বিরুদ্ধেই।
তবু ছবিটা পাল্টাবে বলেই বিশ্বাস করেন ক্রিস্টিন ফর্সটার। এ দিন হাইকোর্টের রায় শুনে তিনিও হতাশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিনের প্রেমিকাকেই বিয়ে করবেন, আশা রয়েছে লেসবিয়ান ক্রিস্টিনের। তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবটের বোন তিনি। অর্থাৎ এ বার স্বীকৃতির দাবি উঠবে টোনির ঘরের ভিতর থেকেই।
সেই দাবির চাপে টোনি নিজের কট্টর অবস্থান বদলান কি না, তা সময়ই বলবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.