ব্রাত্যর উত্তরে বিধি সংশোধন প্রসঙ্গ অধরাই
মূল প্রশ্নটা ছিল বিধি সংশোধন নিয়ে। কিন্তু উত্তরটা মূলত মেঘনাদ সাহা কলেজের অতীত ইতিহাস নিয়েই সীমাবদ্ধ রইল। সোমবার বিধানসভায় প্রশ্নটা তুলেছিলেন এসইউসি বিধায়ক তরুণ নস্কর। জানতে চেয়েছিলেন, কলেজের পরিচালন সমিতিতে শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মনোনীত করার জন্য বিধি সংশোধন করার কথা সরকার ভাবছে কি না। এ প্রসঙ্গে ইটাহারের মেঘনাদ সাহা কলেজের উদাহরণও টেনে আনেন তিনি।
উত্তর দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিধি সংশোধন নিয়ে কিছুই বলেননি। তিনি কেবল বলেন, বাম আমলেও ইটাহার কলেজের পরিচালন সংসদে রাজনৈতিক পরিচয়সম্পন্ন লোকেরাই ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ইটাহারের ওই কলেজটি ২০০০ সালে গড়ে ওঠে। নিয়ম অনুযায়ী, দু’বছরের মধ্যে তার পরিচালন সমিতি গড়ার কথা ছিল। “কিন্তু তা না গড়ে পরিচালন সংসদ তৈরি করে তাতে রাজনৈতিক পরিচয়যুক্ত লোকেদের দিয়ে কলেজ পরিচালনা করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি সংসদ ভেঙে নতুন করে পরিচালন সমিতি তৈরি করতে।” ব্রাত্য বলেন, কলেজটির পরিচালন সংসদে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিআইয়ের তপেশ লাহিড়ী, মনসুর আলি, মইনুল হক। এঁদের সকলে উচ্চশিক্ষিত নন। কেউ কেউ শুধুই মাধ্যমিক পাশ। কলেজের অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায়ও কলেজ সার্ভিস কমিশন দ্বারা নিযুক্ত হননি। কমিশন ক্ষেত্রমোহন সরকারকে অধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত করেছিল। কিন্তু তাঁকে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। ব্রাত্য বলেন, “স্বপ্নাদেবী গণিতের শিক্ষিকা। কিন্তু ওই কলেজে গণিত অনার্সই নেই।” ঘটনাচক্রে, স্বপ্নাদেবী প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমারবাবুর স্ত্রী। যদিও অধিবেশন কক্ষে তা উল্লেখ করেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি শুধু বলেন, “রাজ্যে এমন অনেক কলেজ আছে, যেখানে নিয়ম মেনে পরিচালন সমিতি তৈরি করা নেই। সেগুলি ঠিক করার চেষ্টা করছে সরকার। আশা করছি গোলযোগ নির্মূল করে সঠিক পরিচালন সমিতি গড়তে পারব।”
বিধানসভা কক্ষের বাইরে তরুণবাবু বলেন, সম্প্রতি ইটাহার কলেজের পরিচালন সমিতিতে তৃণমূল নেতা গৌতম পালকে মনোনীত করেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। গৌতমবাবু কলেজের অধ্যক্ষা-সহ তিন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং এক শিক্ষাকর্মীকে নিগ্রহে অভিযুক্ত। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা পাস গ্র্যাজুয়েট-এর বেশি নয়। এসইউসি বিধায়কের মন্তব্য, “বিধি তৈরি করে এ ধরনের লোকেদের পরিচালন সমিতিতে ঢোকা বন্ধ করা যায় কি না, তা-ই আমি জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই জবাবটাই পেলাম না।”
মূল প্রশ্নটি শিক্ষামন্ত্রী এড়িয়ে গেলেন কেন? বিধানসভার বাইরে ব্রাত্য বলেন, “অধিবেশনেই এ নিয়ে যা বলার বলেছি। আমি এ ব্যাপারে এখন আর কিছু বলব না।” মন্ত্রী জানান, স্বপ্নাদেবীর বিরুদ্ধে নানা রকম আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আইনসিদ্ধ পথে পরিচালন সমিতি তৈরি করে সেগুলির তদন্ত করে দেখা হবে। কোনও কারণে তা করা না গেলে প্রয়োজনে প্রশাসক বসিয়ে দুর্নীতির তদন্ত করা হবে।
যদিও স্বপ্না দেবীর দাবি, ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে সরকারি অফিসারদের দিয়ে অডিট করানো হয়েছে। তা রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “কোনও ভুল করিনি। তবু বারবার অসম্মানিত হয়েছি। সরকার চাইলে যে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে।” তাঁর নিয়োগ এবং কলেজে গণিত অনার্স না থাকা নিয়ে মন্ত্রী যা বলেছেন, সে ব্যাপারে স্বপ্নার বক্তব্য, “উনি মন্ত্রী। উনি নিশ্চয় জানেন যে, কলেজ সার্ভিস কমিশনের অনুমতি ছাড়া কোনও নিয়োগ হয় না। আর আমাদের কলেজ অঙ্কে কেমন ফল করে সেটা আগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় জানত, এখন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় জানে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.