দশজন সিপিএম কাউন্সিলর আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। এ বার ইস্তফা দিলেন পুরপ্রধান ও উপ পুরপ্রধান। গত শনিবার হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এবং সোমবার ভাইস চেয়ারম্যান ইরসাদ আহমেদ আনসারি পদত্যাগ করায় ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের একমাত্র বাম পরিচালিত এই পুরসভায় ১৩জন সিপিএম কাউন্সিলরের মধ্যে টিকে রইলেন মাত্র একজন।
সিপিএমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শাসক দলের অত্যাচারের আতঙ্কেই ইস্তফা দিয়েছেন তাঁদের কাউন্সিলাররা। শুধু ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার চন্দ্রা দাস চিকিৎসার জন্য বাইরে থাকায় ইস্তফাপত্র জমা দেননি। ইস্তফা দেওয়া সিপিএম কাউন্সিলরদের দাবি, রাজ্যে সিপিএমের ভরাডুবির পরেও হালিশহর পুরসভায় সিপিএমের বোর্ড গঠনের পর থেকেই এই আতঙ্কের শুরু। সিপিএম কাউন্সিলর শম্ভু ঘোষের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের খাস তালুকে সিপিএম করার খেসারত দিতে মেয়েকে অপহরণ করারও চেষ্টা হয়েছে।”
২৩ আসনের হালিশহর পুরসভায় ১৪টি আসনই সিপিএমের দখলে ছিল। ৮টি পেয়েছিল তৃণমূল ও ১টি কংগ্রেস। শিল্পাঞ্চলের সিপিএম নেতা শম্ভু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরবোর্ড গঠন থেকেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছিল তৃণমূল। মাস দু’য়েক আগে সাবিত্রী দেবী নামে এক কাউন্সিলার সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। গত ২৪ নভেম্বর আটজন সিপিএম কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ভাঙচুর ও মারধর করে পরিবারের লোকেদের। এই অবস্থায় কার্যত প্রাণের তাগিদেই ইস্তফা দিয়েছেন ওই কাউন্সিলাররা।’’
সিপিএমেপ ১০ জন কাউন্সিলার পদত্যাগ করার পরই পুর বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল তৃণমূল। এখন পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধান পদত্যাগ করার পরে বর্তমান পুরবোর্ডের এমনিতেই কোনও অস্তিত্ব থাকল না। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি বলেন, ‘‘নতুন বোর্ড তৈরি না হওয়া পর্যন্ত হালিশহর পুরসভা ভাসমান অবস্থায় থাকবে। জেলাশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি। বোর্ড অব কাউন্সিলের বৈঠকের পরেই নতুন বোর্ড তৈরি হবে। ততদিন কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান হিসাবে একজন কাউন্সিলর থাকবেন।’’ ইস্তফা দেওয়া কাউন্সিলরেরা চাইলে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন এমন ইঙ্গিত বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় আগেই দিয়েছিলেন। এখন দেখার আগের বোর্ডই নতুন মোড়কে আত্মপ্রকাশ করে কি না। |