কোথায় হানবে আঘাত, দিশা ঠিক নেই মাদি-র
গের তিন পূর্বসূরি অভ্রান্ত নিশানায় ঢুকে পড়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশে। কিন্তু শক্তি বাড়ালেও গন্তব্য খুঁজে পাচ্ছে না বঙ্গোপসাগরের নতুনতম ঘূর্ণিঝড় ‘মাদি’। কোথায় গিয়ে আছড়ে পড়বে সে, নিশ্চিত নন আবহবিদেরাও। এই অনিশ্চয়তার জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় সতর্কবার্তাও দেওয়া যাচ্ছে না।
দিল্লির মৌসম ভবন রবিবার জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে শক্তি বাড়িয়ে অতি-প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে মাদি। তবে আগামী কয়েক দিনে আরও কিছুটা শক্তি বাড়ালেও সে সুপার সাইক্লোনের চেহারা নেবে না বলেই আবহবিদেরা মনে করছেন। কিন্তু হাওয়া অফিস বলছে, এর প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশে তাপমাত্রা কমার ক্ষেত্রে বাধা আরও দিন কয়েক থাকবে।
শনিবার সকালে বঙ্গোপসাগরে জন্ম নেয় মাদি। বিকেলেই সে শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছিল। এ দিন উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, চেন্নাই থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে রয়েছে মাদি। খুবই ধীর গতিতে এগোচ্ছে সে। আজ, সোমবার আরও কিছুটা শক্তি বাড়ানোর পরে সে উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। কিন্তু তার অভিমুখ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। পিলিন, হেলেন, লহর-সহ আগের কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় কোথায় আছড়ে পড়তে পারে, নির্দিষ্ট করেই তা জানিয়েছিলেন আবহবিজ্ঞানীরা। সে-দিক থেকে মাদির চরিত্র কিছুটা অস্বাভাবিক। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানী জানান, বায়ুমণ্ডলে কিছু বিশেষ অবস্থার জন্যই এমন আচরণ করছে মাদি।
বঙ্গোপসাগরের এই নতুন অতিথি শেষ পর্যন্ত যেখানেই আছড়ে পড়ুক, সে যে বাংলার শীতের পথে কিছুটা বাধা সৃষ্টি করতে চলেছে, শনিবারেই তার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আলিপুরের আবহবিদেরা।
তাঁরা বলেছেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়বে। আকাশ মেঘলা হবে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা তেমন কমবে না। বরং কোথাও কোথাও তা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বস্তুত, এ দিন কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় আকাশ কিছুটা মেঘলা ছিল। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি বেশি।
সাধারণ ভাবে ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপ স্থলভূমিতে না-ঢোকা পর্যন্ত দুর্বল হয় না। “মাদি কিন্তু সাগরের উপরেই শক্তিক্ষয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে,” মন্তব্য কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানীর। তিনি জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে উপকূলের কাছে সমুদ্রতলের তাপমাত্রা কিছুটা কম রয়েছে। ধীরে চলার ফলে ঘূর্ণিঝড়ের ভিতরেও বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা আছে। এর জেরে সমুদ্রেই শক্তি হারাতে পারে মাদি।
মৌসম ভবনের খবর, কাল, মঙ্গলবার রাত থেকে শক্তি খোয়াতে শুরু করবে ওই অতি-প্রবল ঘূর্ণিঝড়। বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে তার সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ-সব লক্ষণ বিচার করেই আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, বৃহস্পতিবারের আগে শীতের দাপট বাড়বে না। ওই দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, “এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের উপরে অন্তত দু’তিন দিন থাকবে। উপকূল এলাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তেও পারে।” আবহবিজ্ঞানী মনে করছেন, মাদি দুর্বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দক্ষিণবঙ্গে উত্তুরে হাওয়ার পথের বাধা সরবে। শীতের দাপুটে ব্যাটিং দেখা যেতে পারে মাঝ-ডিসেম্বরেই।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.