|
|
|
|
ট্রেনে নিগ্রহ, চিহ্নিত হয়েও গারদের বাইরে ৪ রেলকর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অভিযোগ ওঠার পরেই চার টিটিই বা টিকিট পরীক্ষককে চিহ্নিত করা হয়েছিল। চলন্ত ট্রেনের কামরায় অন্তঃসত্ত্বা যাত্রীর পেটে লাথি মারা এবং শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত ওই চার রেলকর্মীর বিরুদ্ধে প্রমাণও মিলেছে বলে রবিবার দাবি করেন রেল পুলিশের তদন্তকারীরা। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করেননি তাঁরা। হাতে প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন, এই প্রশ্নের কোনও জবাব দিতে পারেনি জিআরপি।
রেল সূত্রের খবর, শনিবার হাওড়ামুখী আমদাবাদ এক্সপ্রেসে এক অন্তঃসত্ত্বা যাত্রী এবং তাঁর স্বামীকে দু’দফায় মারধর করেন চার ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই)। ওই দম্পতি ট্রেনে ওঠেন ভুসাবল স্টেশড়ে। ওঠার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁদের লাথি-ঘুষি মারা হয় বলে অভি যোগ। ট্রেনটি হাওড়া স্টেশনে পৌঁছলে ফের মারধর করা হয় তাঁদের। চোখেমুখে রক্ত জমাট বেঁধে যায় মহিলার স্বামীর। অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই মহিলাও। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রবিবার জানা যায়, অভিযোগ ওঠার পরেই পরেই খড়্গপুর ডিভিশনের চার টিকিট পরীক্ষককে চিহ্নিত করেন রেলকর্তারা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার এ দিন বলেন, “ওই চার টিকিট পরীক্ষকের নাম ডি চন্দ্র, দিলখুশ কুমার, বিএন ঘোষ ও অমর পাত্র। তাঁদের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কিন্তু মারধর করা হল কেন?
অভিযোগকারী মিন্টু ঘোষ জানান, ট্রেনে ওঠার কিছু পরেই তাঁদের টিকিট দেখতে চান এক টিটিই। টিকিট দেখানোর পরে চাওয়া হয় পরিচয়পত্র। মিন্টুবাবুর পরিচয়পত্র থাকলেও তাঁর স্ত্রী রুমকিদেবীর কাছে সেটি ছিল না। টিকিট পরীক্ষক ১৩০০ টাকা জরিমানা করেন। অত টাকা নেই বলে জানানোয় টিটিই তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে পকেট থেকে মানিব্যাগ বার করে ৯০০ টাকা নিয়ে নেন বলে মিন্টুবাবুর অভিযোগ। কিন্তু পরে আরও তিন জন টিটিই উঠে ১২০০ টাকা চান। পিন্টুবাবু জানান, মাত্র ৩০ টাকা আছে। তিন টিটিই রেগে গিয়ে ফের ওই দম্পতিকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
প্রশ্ন উঠেছে, টিকিট পরীক্ষার নামে জরিমানা হিসেবে বারবার এ ভাবে টাকা তোলা হবে কেন? এটা কী ধরনের নিয়ম? রেল সূত্রের খবর, ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বললেই চলে। যাত্রীদের দাবি, ট্রেন ভ্রমণে যে-সব নিয়ম মানার কথা, তা ট্রেনের গায়ে লিখে দেওয়া হোক। তাতে যাত্রীদের সুবিধা হবে। পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকা যে আবশ্যিক, ইদানীং কাউন্টার থেকে কাটা টিকিটের পিছনে তা লেখা থাকছে না। ফলে অনেক যাত্রী ওই নিয়ম জানতে পারছেন না। রেলের প্রাক্তন অধিকর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুর বলেন, “রেল-কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিয়মকানুনগুলি আগে ঠিকঠাক ভাবে যাত্রীদের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থা করুন। নইলে দুর্নীতি বাড়বে।”
রেলকর্তাদের একটি বড় অংশের বক্তব্য, ট্রেনের গায়ে নিয়মবিধি লেখার দরকার নেই। টিকিট পরীক্ষকদের কাছেই সহজ ভাষায় লেখা ট্রেন ভ্রমণে নিয়মকানুনের বই রাখার ব্যবস্থা হোক। যাত্রীরা প্রয়োজনে তা দেখে নিতে পারবেন।
কিন্তু সাধারণ যাত্রীরা দেখতে চাইলেই কি টিকিট পরীক্ষকেরা নিয়মের বই দেখাবেন? এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি রেলকর্তারা।
|
পুরনো খবর: অন্তঃসত্ত্বার পেটে টিটির ঘুসি, মার স্বামীকেও |
|
|
|
|
|