সাগরদিঘির আকর্ষণ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। শুক্রবার জেলাশাসকের দফতরে ৩টি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসন ও মৎস্য দফতরের কর্তারা। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির তরফে সাগরদিঘির মডেল ও পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তুলে ধরা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, দশ দিনের মধ্যে ওই ৩টি সংস্থার মধ্যে একটির হাতে ন্যূনতম ৩ বছরের জন্য দিঘির ‘দায়িত্ব’ দেওয়া হবে। আলোচনা ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি সর্বাধিক ৩৩ বছরের জন্য ওই দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়টিও মাথায় রাখছেন প্রশাসনের কর্তারা।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী নতুন বছরে সাগরদিঘিকে কেন্দ্র করে মাছ ধরার বন্দোবস্ত, সাঁতার, নৌকো বিহার, ভাসমান রেস্তোরাঁ, আলোক সজ্জা, অ্যাকোয়ারিয়াম ও বাহারি গাছ দিয়ে সাজানোর একাধিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “কোচবিহার শহরের আকর্ষণ বাড়াতে সাগরদিঘিকে নতুন ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এ দিন তিনটি সংস্থার সঙ্গে প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি সংস্থাকে খুব শীঘ্র বাছা হবে। জানুয়ারির মধ্যে সাগরদিঘি সাজিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।”
জেলা মৎস্য চাষ বিষয়ক টাস্ক ফোর্সের তরফে দিঘিকে কেন্দ্র করে পর্যটক আকর্ষণ বাড়ানোর ব্যাপারে ‘পিপিপি মডেলে’ উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয় পুজোর আগে। সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিলে কোচবিহারের দুটি এবং কলকাতার একটি সংস্থা সাড়া দেয়। এ দিন কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “সবচেয়ে ভাল প্রকল্প ও বেশি কর্মসংস্থানের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে এক সংস্থাকে বেছে নেওয়া হবে।” এ দিন জেলা মৎস্য দফতরের-সহ অধিকর্তা অলোকনাথ প্রহরাজ বলেছেন, “পরিকল্পনা মতো কাজ করা হলে রাজবাড়ি, মদনমোহন বাড়ির মতো সাগরদিঘিও পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে সাগরদিঘিতে একটি সমবায় সমিতিকে মাছ চাষের জন্য লিজ দেওয়া হয়। এপ্রিলে মেয়াদ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি সাগরদিঘিতে মরা মাছ ভেসে ওঠার ঘটনায় দিঘিটির বেহাল দশা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। তড়িঘড়ি সাগরদিঘিকে নয়া চেহারায় তুলে ধরার ‘ফাইলবন্দি’ প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈঠক ডাকা হয়। প্রশাসনের এক কর্তা দাবি করেন, সমবায় সমিতিকে লিজ দিয়ে এত দিন বছরে গড়ে ৫০ হাজার টাকা সরকারি রাজস্ব আদায় হত। যে সংস্থাই দায়িত্ব পাক না কেন, রাজস্ব বাড়বে। |