নিষেধ উড়িয়ে মেডিক্যালে পার্কিং, সমস্যায় রোগীরা
নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে হাসপাতাল চত্বরে গাড়ি পার্কিং চলছেই। অথচ, চলতি মাসের গোড়ায় রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসকদের গাড়ি ছাড়া কোনও বেসরকারি গাড়ি থাকবে না, অ্যাম্বুল্যান্সও নয়। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব মহলকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, কে শোনে কার কথা! সমস্যার কথা স্বীকার করে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “হাসপাতাল চত্বরে সার দিয়ে গাড়ি পার্কিং করা হলে রোগী এবং রোগীর পরিবারের লোকজন সমস্যায় পড়েন। পরিস্থিতি দেখে গাড়ি পার্কিং নিষেধ করা হয়েছে। বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সও হাসপাতাল চত্বরে বাইরে রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশ কেন মানা হচ্ছে না দেখছি।”
এ ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখন ৫৬০টি শয্যা রয়েছে। গড়ে রোগী ভর্তি থাকেন সাতশো থেকে সাড়ে সাতশো জন। আগামী দিনে শয্যা সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। বহির্বিভাগেও গড়ে দেড় হাজার মানুষ আসেন। পশ্চিম মেদিনীপুর ‘পিছিয়ে পড়া’ এলাকা হিসেবে পরিচিত। জেলার গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে মাঝেমধ্যে নানা অভিযোগ ওঠে। বেশ কিছু ব্লক হাসপাতালে প্রয়োজনীয় পরিষেবা মেলে না। ফলে, অনেকেই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপর ‘ভরসা’ করেন। সামান্য জ্বর হলেও মেদিনীপুর মেডিক্যালে এসে ভর্তি হন। গোয়ালতোড় থেকে লালগড়, কেশিয়াড়ি থেকে নয়াগ্রাম প্রভৃতি এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেও এখানে রোগী আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগীর ‘চাপ’ রয়েছে। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ঢোকার মূল ফটক দু’টি। একটি বটতলাচকের দিকে। অন্যটি মেডিক্যাল কলেজের দিকে। হাসপাতাল চারদিকেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফাঁকা জায়গা রয়েছে। অনেকেই এই সব ফাঁকা জায়গায় গাড়ি পার্কিং করেন। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। ফাঁকা জায়গায় গাড়ি পার্কিং করার ফলে অন্য গাড়ি ঢুকতে-বেরোতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে। সে অ্যাম্বুল্যান্স হোক, কিংবা কোনও বেসরকারি গাড়ি। চিকিৎসকদের একাংশও ক্যাম্পাসে গাড়ি পার্কিং করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। আগে থেকেই সেখানে অন্য গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় অন্য গাড়ি পার্কিং করতে সমস্যা হয়।
হাসপাতাল চত্বরে এ দিক-ও দিক পার্কিং করা গাড়ির অধিকাংশই ভাড়ার গাড়ি। এর মধ্যে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সও রয়েছে। কোনও রোগীকে ‘রেফার’ করা হয়েছে জানতে পারলেই ভাড়ার গাড়ির চালকদের একাংশ ওই রোগীর পরিবারের লোকজনদের কাছে পৌঁছন। গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দরাদরি শুরু করেন। কেমন? মেদিনীপুর থেকে কোনও রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতায় নিয়ে যেতে হলে ভাড়া বাবদ ২৪০০ টাকা খরচ হওয়ার কথা। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে কেউ দাবি করেন ২৮০০ টাকা, কেউ ৩ হাজার কেউ বা ৩২০০ টাকা। অনেক সময় দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স মেলে না। তখন অন্য ভাড়ার গাড়িতেই রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। গাড়ি পার্কিংয়ের ফলে মেডিক্যাল চত্বরের ভেতরে কয়েকটি রাস্তা অপরিসর হয়ে পড়ে। তখন বাইরে থেকে আসা অ্যাম্বুল্যান্স কিংবা অন্য ভাড়ার গাড়িও জরুরি বিভাগের সামনে পৌঁছতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে। যে গাড়িতে রোগী এবং তাঁর পরিবারের লোকজন থাকেন। মেডিক্যাল সূত্রে খবর, চলতি মাসের গোড়ায় রোগী কল্যাণ সমিতির এক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেই ক্যাম্পাসের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়টি ওঠে। এ নিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা জানান কয়েকজন চিকিৎসক। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এ বার থেকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে চিকিৎসকদের গাড়ি ছাড়া কোনও বেসরকারি গাড়ি পার্কিং করা থাকবে না, অ্যাম্বুল্যান্সও নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, আগের থেকে মেডিক্যাল চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ের প্রবণতা কমেছে। নজরদারি চালানোর ফলেই এই পরিস্থিতি। হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।” তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস মতো বাস্তবে পরিস্থিতির কতটা পরিবর্তন হয়, সেটাই দেখার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.