দুই জেলায় দু’টি আলাদা পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তিন জনের। শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার আটুরিয়া গ্রামের ছ’মাইলের কাছে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় বাপি গাজি (১৯) নামে এক যুবক ও শ্যামল সরকার (৫০) নামে এক ব্যবসায়ীর। বাপির বাড়ি কাবিলপুরে। শ্যামলবাবু কাটিয়াহাট বাজার এলাকার বাসিন্দা। আটুরিয়ায় দিদির বাড়িতে নিমন্ত্রণে আসার পথে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁকে চাপা দিয়ে পালানোর সময়ে কাটিয়াহাট বাজারে কাছে শ্যামলবাবুকেও ধাক্কা মারে লরিটি। অন্য দিকে, টিউশন পড়ে ফেরার সময়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে ডাম্পার চাপা পড়ে মৃত্যু হয় সালমা গাজি (১৭) নামে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর। তাঁর বাড়ি হাটপাড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাবিলপুরের বাপি মুম্বইতে সেলাইয়ের কাজ করতেন। এক সপ্তাহ আগে বাড়ি ফেরেন। আগামী মঙ্গলবার ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। যাওয়ার আগে আটুরিয়া গ্রামের ছ’মাইলের কাছে দিদির বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছিল তাঁর। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ সঙ্গী হাসানুর গাজিকে নিয়ে মোটরবাইকে করে তাঁরা দিদির বাড়ি আসছিলেন। বাড়ির কাছেই এক জায়গায় মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে কথা বলার সময়ে আচমকা তেঁতুলিয়া থেকে আসা একটি লরি তাঁদের ধাক্কা মারে। দু’জনেই ছিটকে পড়েন। বাপিকে পিষে দিয়ে চলে যায় লরিটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসিনুরকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এর পরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ লরিটির পিছনে ধাওয়া করেন। পালানোর সময়ে সেটি কাটিয়াহাট বাজারের কাছে শ্যামলবাবুকে ধাক্কা মারলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। অন্য দিকে, গ্রামবাসীরা ধাওয়া করে আটুরিয়া থেকে বেশ কয়েক মাইল দূরে পুঁড়ো গ্রামের কাছে বেশ লরিটিকে ধরে ফেলেন। চালককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। লরিটি আটক করা হয়। পুলিশের দাবি, খবর পেয়ে কাটিয়াহাট ফাঁড়ি থেকে কনস্টেবল হরিপদ দত্ত দল নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়দের একাংশ তাঁদের মারধর করেন। এর পরে বাদুড়িয়া থানার ওসি কল্লোল ঘোষ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে স্বরূপনগর থানার ওসিও ঘটনাস্থলে আসেন। বাপির দেহ ফেলে রেখে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও লরিচালকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ চলতে থাকে। এর জেরে সংগ্রামপুর-তেঁতুলিয়ার মধ্যে গাড়ি চলাচল সাময়িক ব্যাহত হয়। পরে দাবিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ ওঠে। অন্য দিকে, এ দিন সকালে টিউশন পড়ে ফেরার সময়ে জয়নগর থানা মোড়ে কুলতলিগামী একটি ডাম্পার চাপা দেয় সালমাকে। একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ডাম্পারটি আটক করা হলেও চালক পলাতক। |