সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত ডেবরায়
আহত
দু’পক্ষের ২৫, আক্রান্ত পুলিশও নিজস্ব সংবাদদাতা • ডেবরা |
তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষে তেতে উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা।
সিপিএমের লোকেরা দলীয় কার্যালয় পুড়িয়েছে অভিযোগে শুক্রবার দুপুরে ডেবরা থানা এলাকার চকবাজিত গ্রামে মিছিল করছিল তৃণমূল। সেই মিছিলকে ঘিরেই উভয়পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ সদস্য বিবেক মুখোপাধ্যায়, ব্লক সভাপতি রতন দে, জেলা সাধারণ সম্পাদক অলোক আচার্য-সহ প্রায় ২০ জন তৃণমূল নেতা-কর্মী আহত হন। সিপিএমের পাঁচ কর্মীও জখম হয়েছেন। আহত ২১ জনকে প্রথমে ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর জখম ১৪ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। এ দিন সন্ধ্যায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিবেকবাবুকে কলকাতার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশও। ডেবরার সার্কেল ইন্সপেক্টর সুপ্রিয় বসু-সহ আট পুলিশ কর্মী জখম হন। বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের দুই চিত্র সাংবাদিকও আহত হন। |
ডেবরায় জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ। |
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায়। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের একটি মিছিলকে লক্ষ করে হামলা চলেছে। পুলিশকর্মীরাও আহত হয়েছেন। দু’টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য এলাকায় পুলিশ পিকেট থাকবে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ ডেবরার লোয়াদা পঞ্চায়েতের চকবাজিত এলাকায় তৃণমূল বুথ কমিটির কার্যালয়ে আগুন লাগায় কয়েকজন। সিপিএমের লোকেরাই আগুন লাগিয়েছে অভিযোগ তুলে এ দিন সকালে এলাকায় একটি মিছিল বের করে তৃণমূল। অভিযোগ, দুপুর ১টা নাগাদ গোটগেড়িয়া এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা ওই মিছিলে হামলা চালান।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতির অভিযোগ, “দলীয় কার্যালয় পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় সিপিএমই দায়ী। প্রতিবাদে এ দিন দলের নেতা-কর্মীরা ওই এলাকায় শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করছিল। সিপিএম সেখানে হামলা চালায়।” |
চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আহত এক পুলিশকর্মীকে। |
তৃণমূলের অভিযোগ খারিজ করে সিপিএম জোনাল সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ মণ্ডলের দাবি, “তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করতে চাইছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়টি পুড়ে গিয়েছে। এখন অন্তর্দ্বন্দ্ব ঢাকতে ওরা আমাদের দিকে আঙুল তুলছে।” তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল মিছিল করে আমাদের লোয়াদা লোকাল কমিটির সম্পাদক রবীন দত্তের বাড়ি ভাঙচুর করতে যায়। দলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশ ওই ঘটনা প্রতিরোধ করেন।”
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যান জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ, খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সন্তোষকুমার মণ্ডল। গোটা ঘটনা ঘিরে এখনও থমথমে এলাকার পরিবেশ। বেশ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তবে কোনও পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশও কাউকে গ্রেফতার দেখায়নি।
এ দিন সন্ধ্যাতেই আবার স্থানীয় লোয়াদা ও গোলগ্রামে সিপিএমের লোকাল কমিটির কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। |
—নিজস্ব চিত্র। |
|