|
|
|
|
হার গিলে চোর দিব্যি ওড়াল ২৮টি কলাও
নিজস্ব সংবাদদাতা |
পেটের ‘অসহযোগ আন্দোলন’। আর তাতেই গিলে ফেলা সোনার হার উদ্ধার করতে গিয়ে ঘোর সঙ্কট!
থানায় বসেই কপাকপ একের পর এক কলা খাচ্ছে হার চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত। তাতে ‘কাজের কাজ’ হচ্ছে না। বারবার তাকে শৌচাগারে নিয়ে যেতে যেতে হাঁফিয়ে উঠেছেন পুলিশকর্মীরাও। এমনকী, ওই অভিযুক্তকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হলেও তার জন্য মোতায়েন করে রাখা হয়েছিল দু’জন পুলিশকর্মী।
ব্যাপারটা কী? পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ স্ট্র্যান্ড রোডের একটি অভিজাত ক্লাবের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা ঈশানী চট্টোপাধ্যায়। এক দুষ্কৃতী আচমকা তাঁর সোনার হার ছিনতাই করে পালায়। ঘটনার পর পরই ঈশানীদেবী ওই এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে ওই মহিলার বিবরণ শুনে বাবুঘাট এলাকার বাসিন্দা রবি ঠাকুর নামে এক যুবককে পাকড়াও করে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, ধৃত রবি বাবুঘাট এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। তার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রায় পাঁচটি ছিনতাইয়ের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। |
|
অঙ্কন: সুমিত্র বসাক। |
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিকে পাকড়াও করা হলেও চোরাই হার উদ্ধার করা যায়নি। রবি প্রথমে ছিনতাইয়ের ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করে। এতে বিপাকে পড়ে যান তদন্তকারীরা। কিন্তু জেরায় সন্দেহ দৃঢ় হতে থাকে তদন্তকারীদের। পুলিশ জানায়, এর পরেই রবিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এক্স-রে করানো হয়। ডিসি (সেন্ট্রাল) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, “রবির তলপেটে হারটি রয়েছে বলে এক্স-রে রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে।” এক তদন্তকারী বলেন, “পুলিশের হাতে ধরা পড়ার সময়েই কোনও ভাবে হারটি গিলে ফেলেছিল রবি।”
এর পরেই হেয়ার স্ট্রিট থানায় এনে একের পর এক কলা খাওয়ানো শুরু হয় রবিকে। কেন কলা খাওয়ানো হচ্ছে রবিকে? তদন্তকারীরা জানান, বেশি করে কলা খাওয়ালে বারংবার মলত্যাগ হয়। তাতেই পেট থেকে হারটি বেরিয়ে আসা সম্ভব। এ ভাবে কলা খাইয়ে আগেও পেট থেকে সোনার হার বার করেছে পুলিশ। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রবিকে প্রায় ২৮টা কলা খাইয়েও বিশেষ লাভ হয়নি।
তদন্তকারীরা বলছেন, “কলা খাচ্ছে তো খাচ্ছেই। কিন্তু হার বেরোচ্ছে কই!” পরে ওই রকম অবস্থাতেই শুক্রবার রবিকে হাজির করানো হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। এক পুলিশকর্তা বলেন, “আমরা আদালতে রবির মলত্যাগের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রেখেছিলাম। সেটাও কাজে লাগল না।” পুলিশ জানায়, আদালতে তোলা হলে রবিকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তাই ফের থানায় আনা হয়েছে রবিকে। চলছে কলা খাওয়ানো। |
|
|
|
|
|