বিদ্যুত্বাহী খুঁটি বসেছে। তাতে জুড়েছে তারও। কিন্তু বছর ঘুরলেও শুধু মাত্র ট্রান্সফর্মার বসেনি বলে আজও অন্ধকারে রয়েছে আস্ত একটা গ্রামই। এমনটাই অভিযোগ রামপুরহাট থানা এলাকার আদিবাসী অধ্যুষিত বেলডাঙা গ্রামের বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই গ্রামে ৬০টি পরিবার বসবাস করেন। প্রত্যেকেই বিপিএল তালিকাভুক্তও। তবু আজকের দিনেও সেখানে পৌঁছয়নি বিদ্যুতের আলো। অথচ সংশ্লিষ্ট মাসড়া পঞ্চায়েত থেকে রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতি দুই কার্যালয়েই বাসিন্দাদের অভিযোগ পৌঁছেছে। এমনকী, নিজেদের প্রাপ্য অধিকার পেতে বেলডাঙার মানুষ বারবারই ছুটেছেন রাজ্য বিদ্যুত্ বণ্টন কোম্পানির বিভিন্ন অফিসে। গ্রামবাসীদের দাবি, কোনও ক্ষেত্রেই কোনও সুরাহা মেলেনি। অথচ আশপাশেরই নিরিষা, গামারপাহাড়ি, শালতোলা, জামকাঁদর, আলুপাহাড়ির মতো গ্রামগুলিতে কিন্তু তা পৌঁছে গিয়েছে। স্থানীয় কমল সোরেন, সর্দার মার্ডিরা বলছেন, “দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যুত্ চেয়ে আমরা প্রশাসনের সব ক’টা স্তরেই আবেদন জানিয়ে আসছি। মাসড়া পঞ্চায়েতে এলাকার ৩৩টি আদিবাসী গ্রামের অধিকাংশ গ্রামেই বিদ্যুত্ পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে এত দিনেও প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই মেলেনি।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই গ্রামে প্রায় এক বছর আগেই বিদ্যুত্ পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। তার জন্য এলাকায় বিদ্যুত্বাহী খুঁটি বসেছে, তারও লাগানো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু লাইন চালু করার জন্য ট্রান্সফর্মারটাই বসানো হয়নি। ফলে বাসিন্দাদের দু’ কিমি দূরে রেশন দোকান থেকে কেরোসিন নিয়ে এসে ঘরের আলো জ্বালতে হয়। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হচ্ছে কেরোসিনে জ্বলা লন্ঠনের টিমটিমে আলোতেই। এমনকী, প্রয়োজনীয় ধান, গম পেশাই করার ক্ষেত্রেও গ্রামবাসীকে ছুটতে হয় আধ কিমি দূরের নিড়িষা গ্রামে। এই পরিস্থিতি, বাসিন্দাদের প্রশ্ন আর কত দিন তাঁদের এ ভাবেই কাটাতে হবে?
যোগাযোগ করা হলে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুত্ বণ্টন কোম্পানির রামপুরহাট বিভাগীয় ম্যানেজার অসিতকুমার শ্যামল অবশ্য বলেন, “বিষয়টি জেলা গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন বিভাগ দেখছে। আমরা বিষয়টি তাদের নজরে আনব।” কিছু দিন আগেও জেলা প্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার ছিলেন কোম্পানির বর্তমান বীরভূম জেলা সার্কেল ম্যানেজার তপনকুমার দে। এ দিন তিনি বলেন, “সব জায়গায় হয়ে গেল অথচ ওখানে এখনও হয়নি! ঠিক আছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।” এ দিকে নতুন প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রদীপ নাগ বলেন, “আমি নতুন এসেছি। কী হয়ে আছে, খোঁজ নিয়ে এই ডিসেম্বরের মধ্যেই ওই গ্রামে বিদ্যুত্ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।” |