ব্যবসায়ী রাজেশ জায়সবাল খুনের ঘটনার পরেই এলাকার পরিত্যক্ত রেল আবাসনগুলিতে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবি তুলেছেন হিরাপুরের নিচুপাড়ার বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে আশ্বাস পুলিশের। রেলের তরফেও জানানো হয়, বিষয়টি নিয়ে চিন্তা -ভাবনা চলছে।
রবিবার রাতে নিচুপাড়া এলাকার ঠিক যেখানে রাজেশ খুন হন, তার প্রায় দু’শো মিটার দূরেই রয়েছে দক্ষিণ -পূর্ব রেলের একটি আবাসন কলোনি। সেখানে প্রায় ২৫টি আবাসন আছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু বছর আগে সেখানে একটি রেল ইয়ার্ড ছিল। মূলত ইস্কোর পণ্য আনা -নেওয়ার জন্যই তৈরি হয়েছিল সেটি। কর্মীদের থাকার জন্য সেখানে আবাসন কলোনি গড়ে রেল। কিন্তু বছর কুড়ি আগে এই ইয়ার্ডটি বন্ধ হয়েছে। কর্মীরাও তাই এখান থেকে চলে গিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সব আবাসন এখন দখল করে বাস করছেন এক দল বহিরাগত। তারা কোথা থেকে কী ভাবে এখানে এসেছেন তা তাঁদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। রেলের এই আবাসন কলোনির আশপাশে একাধিক ব্যক্তিগত কলোনিও আছে। সেখানকার আবাসিকেরাই মূলত এই রেল আবাসনগুলিতে অসামাজিক কাজ কারবারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাঁরাই এই আবাসন কলোনিতে দুষ্কর্ম বন্ধে ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন।
|
নিচুপাড়া এলাকায় এই সব আবাসনই জবরদখল হয়েছে বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র। |
কী ধরনের অসামাজিক কাজকর্ম চলে, তা জানতে চাওয়া হলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সন্ধ্যা নামলেই ওই আবাসনগুলিতে মদ্যপান ও জুয়ার আসর বসে। প্রচুর অপরিচিত মানুষজন এসে ভিড় জমায়। গভীর রাত পর্যন্ত নানা ধরনের মানুষজনের আসা -যাওয়া চলে। প্রায়শয়ই অশান্তি বেধে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও অভিযোগ করেন, তাঁরা কয়েক বার সংগঠিত ভাবে এ সব কাজ -কারবারের বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না হওয়ায় ফল হয়নি। এলাকাটি আসানসোল পুরসভার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। স্থানীয় কাউন্সিলর মিলন মণ্ডল জানান, বাসিন্দাদের এই সমস্যার কথা তিনি জেনেছেন। তিনি বলেন, “সম্প্রতি উপ -নির্বাচনে জিতে আসার পরে আমি পুলিশের সঙ্গে এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি।”
নিচুপাড়া লাগোয়া এই রেল আবাসন কলোনিতে এ ধরনের সমস্যার কথা অজানা নয় পুলিশেরও। আসানসোল -দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (পশ্চিম ) গৌরব লাল জানান, সংশ্লিষ্ট রেল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখে এই পরিত্যক্ত আবাসনগুলি জবরদখলমুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেগুলি যেন ফের দখল না হয়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও জানানো হয়েছে। গৌরব লাল বলেন, “রেলের আবাসন কলোনি এলাকায় আপাতত পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে।” রেলের এক আধিকারিক জানান, তাঁরাও এই আবাসনগুলি নিয়ে চিন্তা -ভাবনা শুরু করেছেন। |