রাজ্যপাল আগেই জানিয়েছেন, ইটাহারে অধ্যক্ষা-নিগ্রহের ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন। সোমবার শিক্ষামন্ত্রীও জানালেন, ইটাহারের মেঘনাদ সাহা কলেজে অধ্যক্ষা-সহ তিন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং এক শিক্ষাকর্মীকে হেনস্থায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গৌতম পালকে সেখানকারই পরিচালন সমিতিতে মনোনীত করার ব্যাপারে কথা বলবেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। ওই কলেজ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন।
সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেই গৌতমবাবুকে পরিচালন সমিতিতে মনোনীত করা হয়েছে।
গৌতমবাবু উত্তর দিনাজপুরের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজের অধ্যক্ষ স্বপ্না মুখোপাধ্যায়-সহ তিন শিক্ষক এবং এক শিক্ষাকর্মীকে নিগ্রহে অন্যতম অভিযুক্ত। কলেজ সূত্রের খবর, গৌতমবাবুর স্ত্রী পম্পা পালের বিরুদ্ধে পরীক্ষায় টোকাটুকির অভিযোগ ওঠাকে কেন্দ্র করেই গোলমাল বাধে। ওই নেতা তার জেরেই অধ্যক্ষা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিগৃহীত করেন বলে অভিযোগ। বিতর্কিত এই তৃণমূল নেতা, যাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতাও সামান্য পাশ গ্র্যাজুয়েট, তাঁকে কেন ওই কলেজেরই পরিচালন সমিতিতে রাখা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ভাঙড় কলেজের শিক্ষিকা দেবযানী দে-কে নিগ্রহে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসমালকেও ওই কলেজের পরিচালন সমিতিতে সভাপতি হিসেবে রেখে দেওয়ায় একই ধরনের বিতর্ক বেধেছিল। সে-ক্ষেত্রে অবশ্য কড়া সমালোচনা করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু মেঘনাদ সাহা কলেজের ঘটনায় এ-পর্যন্ত তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ দিন বলেন, “গৌতমবাবু বিশ্ববিদ্যালয় মনোনীত প্রতিনিধি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসন রয়েছে। এ ব্যাপারে আমার মতামত নিষ্প্রয়োজন। তা সত্ত্বেও এক বার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে দেখব।” তবে ব্রাত্যবাবুর মতে, পাশ গ্র্যাজুয়েট হলেও পরিচালন সমিতির সদস্য হতে বাধা নেই। তিনি বলেন, “কোনও অধ্যক্ষের রাজনৈতিক পরিচয় থাকতেই পারে। কিন্তু দেখতে হবে, তিনি কলেজে কাজের ক্ষেত্রে রাজনীতি করছেন কি না।” গৌতমবাবু অবশ্য এ দিন জানান, তাঁর সঙ্গে সরকারের তরফে কেউ এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করেননি।
আর অধ্যক্ষা স্বপ্নাদেবী বলেছেন, “গৌতম পালকে শিক্ষানুরাগী হিসেবে যদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন সমিতিতে রাখা হয়, তিন জেলার মানুষের কাছে তার চেয়ে হতাশার কিছু নেই।” |