ঘরে বসে হাতের কাজ করে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে নেমেছেন আলপনা দেবনাথ, তনুশ্রী চৌধুরী, অর্পিতা ও অমৃতা দত্ত’রা। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের ফতেপুর এবং রায়নগর এলাকার বাসিন্দা, কেউ গৃহবধূ, কেউ পড়াশোনার পর বেকার। ঘর সংসার সামলে দল বেঁধে তাঁরা নানা রঙের পুঁথি, ক্রিস্টালের গয়না গড়ছেন। কেউ কাচের পেঙ্গুইন, হাঁস তৈরিতে ব্যস্ত। ব্যাগস টেবিল ক্লথ তৈরির পাশাপাশি বুটিকের নকশায় মেতেছেন অনেকে। হাতে সময় কম। তাই শেষবেলায় দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ২৩ মহিলার লড়াইয়ে সরগরম সীমান্তের দু’টি গ্রাম। |
ব্যস্ত বধূরা। —নিজস্ব চিত্র। |
বালুরঘাটের হাইস্কুল মাঠে ৪-১৪ ডিসেম্বর চলবে সবলা মেলা। বালুরঘাটে হস্তশিল্পের ওই মেলায় ডাক পেয়েছেন ফতেপুরের অবকাশ মহিলা স্বনির্ভর এবং সর্বজয়া মহিলা স্বনির্ভর নামে দুটি গোষ্ঠীর ওই মহিলারা। প্রথমটিতে সদস্য ১১। দ্বিতীয় গোষ্ঠীতে ১২। ছ’মাস আগে দল গড়ে তাদের পথচলা শুরু হলেও দুর্গাপুজোর সময় হাতের তৈরি জিনিস বিক্রি করে ভাল সাড়া পেয়েছেন মহিলারা। ঘরেও এসেছে দুটো পয়সা। ‘এতে আত্মবিশ্বাস বড়ে যায়’এ মন্তব্য হিলি নপাড়া তিওড় সমাজকল্যাণ সমিতির সম্পাদক অজিত সরকারের। সমিতি তত্ত্বাবধানে গোষ্ঠী গড়ে পথ চলা শুরু। অজিতবাবু বলেন, “ছ’মাস আগে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দল দুটির গ্রেডিং হয়নি। ফলে ব্যাঙ্ক বা সরকারি সহায়তা না পেলেও মহিলারা নিজ উদ্যোগে চাঁদা তুলে নজরকাড়া সামগ্রী গড়েছেন।” অবকাশ গোষ্ঠী নেত্রী অঞ্জলি দেবনাথ বলেন, “পুজোর সময় হিলিতে স্টল করে ক্রিস্টালের তৈরি নানা রকমের গয়না থেকে গৃহসজ্জার সামগ্রী ও খেলনা পুতুল বিক্রির পর সকলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। সরকারি মেলার ডাকে অনেকের সামনে নিজ হাতের কাজ তুলে ধরার সুযোগ পেয়ে উৎসাহ বেড়েছে।”
হিলির ফতেপুরে অবকাশ-এর সদস্য আলপনা দেবনাথ আর রায়নগর এলাকায় সর্বজয়া-র দলনেত্রী সীমাদাস মোহান্তর বাড়িতে বসে শিল্পকর্মগুলির গোছানোয় ব্যস্ত সকলে। সীমাদেবীর কথায়, “মেলা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো লক্ষ্য নিয়ে মন ঢেলে কাজ করেছি।” হস্তশিল্পী মহিলারা জানান, রকমারি সম্ভার নিয়ে মেলায় স্টল থাকবে। ক্রিস্টালের তৈরি কারুকার্যখচিত একটি সাইড ব্যাগ তৈরিতে খরচ ২৩০ টাকা। বিক্রি হয় ২৫০ টাকায়। ‘ফার’ দিয়ে তৈরি হাঁস বিক্রি হবে ১২০ টাকায় খরচ ১০০ টাকা। অবকাশ-এর জয়শ্রী সরকার বললেন, “অল্প মার্জিনে হাতে তৈরি শিল্প বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” |