এসজেডিএ কাণ্ডে সরব বাম, কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
এসজেডিএ-এর বহু কোটি টাকা দুর্নীতি মামলায় নানা তথ্য মিলিয়ে দেখতে যাঁকে একটা সময়ে পুলিশি জেরায় পড়তে হয়েছিল, সেই মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকারও এ বার প্রকাশ্যে সরব হলেন। সোমবার শিলিগুড়ির হাসমি চকে এক জনসভায় দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভাপতি শঙ্করবাবু এসজেডিএ মামলার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। শঙ্করবাবু বলেন, “সারদা কাণ্ড, এসজেডিএ মামলা, পোর্ট ট্রাস্টের জমি সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার ভার সিবিআইকে দিতে হবে। আমরা ওই দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাব।” |
|
|
এসজেডিএ-কাণ্ডে পুলিশি জেরার
পরে শঙ্কর মালাকার। ফাইল চিত্র। |
সোমবার সিবিআই তদন্তের দাবি
জানাচ্ছেন শঙ্কর। —নিজস্ব চিত্র। |
|
এর পরে শঙ্করবাবুর সংযোজন, “ওই মামলায় নানা তথ্যের ব্যাপারে আমার কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। সেটা আমি করেছি। এখন ঘটনা পরম্পরা যে দিকে এগোচ্ছে তাতে সিবিআই তদন্ত জরুরি। সিবিআই তদন্ত হলে সব কিছুই প্রকাশ্যে আসবে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে দার্জিলিং জেলার নেতাদের সিংহভাগই অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন তৃণমূল নেতা জানান, মুখ্যমন্ত্রী যখন তদন্ত শুরু করিয়েছেন, তা শেষ করেই ছাড়বেন। তৃণমূলের একজন জেলা স্তরের নেতা জানান, রাজ্যে যেখানে জোট ভেঙে গিয়েছে, সেখানে কংগ্রেসের বিধায়ক হিসেবে শঙ্করবাবু কেন এসজেডিএ-এর সদস্য পদে রয়ে গিয়েছেন সেটা আগে স্পষ্ট হওয়া দরকার। যে প্রসঙ্গে শঙ্করবাবু অবশ্য জানান,সঠিক সময়ে তিনি সঠিক পদক্ষেপ করবেন।
এসজেডিএ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে সোমবার থেকে আন্দোলনে নেমেছে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টও। এ দিন বিকাল চারটেয় অনিল বিশ্বাস ভবনের সামনে থেকে মিছিল বের করে বাম সদস্যরা। শহরের প্রধান রাস্তাগুলি দিয়ে মিছিলটি যায়। অশোকবাবু জানান, আগামী ৪ ডিসেম্বর এসজেডিএ’র সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন বাম সদস্যরা। আগামী ৬ ডিসেম্বর বাঘা যতীন পার্কে অবস্থান করবে বামেরা। এ ছাড়াও সমস্ত বামপন্থী গণ সংগঠনগুলিও আন্দোলনে নামবে বলে জানিয়েছেন অশোকবাবু। তিনি বলেন, “এসজেডিএ থেকে টাকা লুঠ হয়েছে। সারদা কান্ডের পর এসজেডিএ কান্ড থেকে পরিষ্কার এই সরকার দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছেন। আমরা চাই এসজেডিএ কান্ডে আরও যাদের নাম অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে তাদের গ্রেফতার করতে হবে।” |
শিলিগুড়িতে বামফ্রন্টের র্যালি । ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
|
এ দিন অশোকবাবু দাবি করেন, এসজেডিএ’র কাজ নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে অডিট করেছে তাতে বৈদ্যুতিক চুল্লি, সিসি ক্যামেরা নিয়ে একাধিক বিষয়ে দুর্নীতির বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। ওই রিপোর্ট জনসাধারণের সামনে প্রকাশ করার দাবি জানান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, এক বছর ধরে ওই দুর্নীতি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম তা প্রকাশ্যে আনেন। ওই অভিযোগে এসজেডিএ’র তৎকালীন চেয়ারম্যান শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। তিনি বলেন, “পুলিশ যখন তদন্ত ঠিকঠাক পথে নিয়ে যাচ্ছিল সেই সময় কমিশনারকে বদল করে কেন বাধা তৈরি করা হল তা খতিয়ে দেখা দরকার।” |