আলু-কাণ্ডের জের, ভাঙতে পারে ফব |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
আলু কেলেঙ্কারি নিয়ে ভাঙনের মুখে জলপাইগুড়ি জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক।
দলের জেলা কমিটি সূত্রে খবর, এই কেলেঙ্কারিতে দলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন জেলা সম্পাদক গোবিন্দ রায় এবং তাঁর স্ত্রীর নাম জড়িয়ে পড়ায় দলকে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বলে সম্প্রতি দলে অভিযোগ তোলেন একাংশ নেতা। আলিপুরদুয়ারের যে নেতা গোবিন্দবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। তেমনই একাংশ জেলা নেতা গোবিন্দবাবুর সমর্থনে সক্রিয় হলেও, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও ওই নেতাদের ক্ষোভ।
দলীয় সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে জেলা কমিটির সদস্য একাংশ নেতা সরাসরি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘাতের রাস্তা নেওয়ার পক্ষপাতি বলে দলের অন্দরে জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকী, সোমবার কলকাতায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লকের একাংশ নেতার বৈঠকও হয় বলেও দল সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও দলের জেলা সম্পাদক প্রবাল রাহা বলেন, “দলের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমি সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করতে প্রস্তুত নই। যা বলার দলের ভিতরেই বলব।” একইভাবে, দলের জেলা সভাপতি অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সরকারি আলু কেনার টাকা আত্মসাৎ করার মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পরে জলপাইগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক গোবিন্দ রায়কে দলের জেলা সম্পাদক, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য-সহ সব পদ থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্য নেতৃত্ব। দুর্নীতির অভিযোগে জামিন অযোগ্য মামলায় অভিযুক্ত গোবিন্দবাবু প্রায় মাস চারেক জেলবন্দি থাকার পরে মুক্তি পেয়েছেন। তবে দলের জেলা কমিটির একাংশের অভিযোগ, দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলবন্দি থাকার পরেও, গোবিন্দবাবুর বিরুদ্ধে দলে কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। সে কারণে, দলের নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ‘দল বিরোধী’ কার্যকলাপের অভিযোগ জানালেও দলের তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন ওই নেতারা।
একাংশ জেলা নেতার তাঁকে সমর্থন করার প্রসঙ্গে গোবিন্দবাবু বলেন, “দলের অনেক নেতা-কর্মীই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এ বিষয়ে তাঁদের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করার বিষয়টিও তাঁদের মুখেই শুনেছি। আর আমি যে নির্দোষ সে বিষয়ে আমাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সময়েই দলের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল। কাজেই দলের তদন্ত কমিটি গঠনের প্রাসঙ্গিকতা থাকে কী?”
ফব-র একাংশ নেতা যে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তা স্বীকার করেছে তৃণমূলও। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রয়াত মন্ত্রী তথা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহের কন্যা ইন্দ্রাণী ব্রহ্ম বলেন, “ফরওয়ার্ড ব্লকের জলপাইগুড়ির একাধিক শীর্ষ নেতাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মানুষের উন্নয়ন যাঁরা চান তাঁরা সকলেই তৃণমূলে স্বাগত।” দলে ভাঙনের আশঙ্কার প্রশ্নে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা অবশ্য বলেন, “ভাঙনের খবর ঠিক নয়। তবুও সব কিছুই নজরে রাখা হচ্ছে।” |