স্কুলে এক জন মাত্র শিক্ষক। পড়ুয়াসংখ্যা ২৩। তিন মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে সোমবার স্কুলে এসেছিলেন ওই শিক্ষক। ক্ষোভে ওই শিক্ষককে ক্লাসঘরে ঢুকিয়ে দিনভর তালাবন্দি করে রাখলেন অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। মানবাজার থানার গণেশগড়া প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ মানবাজার ১ চক্রের অবর স্কুল পরিদর্শক ইরা সুবুদ্ধি গ্রামে গিয়ে ফটিক কালিন্দী নামে ওই শিক্ষককে মুক্ত করেন। সমস্যা মেটাতে আজ, মঙ্গলবার গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন স্কুল পরিদর্শক।
এ দিন দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের সামনে শতাধিক বাসিন্দা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ভিতরে ওই শিক্ষক তালাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ইরা সুবুদ্ধি বলেন, “ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বহু অভিযোগ রয়েছে। এমনকী শো-কজ অবধি করা হয়েছে। উনি তারও জবাব দেননি। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” গণেশগড়ার বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ নারায়ণদেব, সুভাষ গোপ, সুধাকর নারায়ণদেবদের অভিযোগ, “এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ। উনি রোজ স্কুলে আসেন না। ১২টা-সাড়ে ১২টা স্কুলে এসে ২টোর মধ্যে ছুটি দিয়ে চলে যান। স্কুলে মিড-ডে মিলের রান্না হয় না। সর্বশিক্ষা মিশন থেকে পাওয়া অর্থে অতিরিক্ত ক্লাসঘর তৈরির কাজ শুরু হয়েও অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওই শিক্ষক কাউকে হিসাবও দেন না।”
আর এক গ্রামবাসী লাল্টু গোপ বলেন, “১৫ অগস্টের পর থেকে আর স্কুলমুখো হননি ওই শিক্ষক। আমরা কয়েকবার পরিদর্শকের অফিসে গিয়ে ঘটনার কথা জানিয়েছি। লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছি। এমনকী অবর স্কুল পরিদর্শক স্কুলে এসে শিক্ষককে পাননি।” স্কুলটির পড়ুয়ারা জানান, তারা রোজ স্কুলে যায়। মাস্টারমশাইয়ের অপেক্ষায় থেকে ফের বাড়ি ফিরে যায়। স্কুলে দুপুরের রান্না হয় না। এ দিন একদল বাসিন্দা ব্লক অফিসে গিয়ে বিডিও-র কাছেও ওই শিক্ষকের সম্পর্কে অভিযোগ জানান। মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব বলেন, “ওই শিক্ষক এতদিন কেন অনুপস্থিত ছিলেন তা আগে জানাতে হবে।” পুরুলিয়া দেলা বিদ্যালয় (প্রাথমিক) পরিদর্শক বৃন্দাবনচন্দ্র দাস বলেন, “এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত অবর স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে কথা হয়নি। ঘটনা জেনে ব্যবস্থা নেব।” প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের জেলা সভাপতি নীলকমল মাহাতো অবশ্য জানিয়েছেন, ওই শিক্ষককে ওখান থেকে সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষক ফটিক কালিন্দী এ দিন দাবি করেন, “সাড়ে তিন মাস নয়, শরীর খারাপ থাকায় মাসখানেক আমি স্কুলে আসিনি।” স্কুল পরিদর্শককে তাংর অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবে ফটিকবাবু বলেন, “পরিদর্শকের ফোন নম্বর জানি না।”
সচেতনতা শিবির। নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পে গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের সচেতন করতে শিবির করল রঘুনাথপুর ২ ব্লক প্রশাসন। সম্প্রতি ব্লক সদর চেলিয়ামায় অনুষ্ঠিত উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) সুরেন্দ্রকুমার মিনা, বিডিও উৎপল ঘোষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনীষা ঘোষ, সাঁওতালডিহি থানার আইসি ত্রিগুনা রায় এবং ওই ব্লকের পঞ্চায়েতগুলির প্রধান ও সমিতির সদস্যেরা। বিডিও জানান, এই প্রকল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে শিবিরে আলোচনা ও পথ নাটিকার মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়েছে। |