সারদাকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জড়িত বলে অভিযোগ করে সিবিআই তদন্ত দাবি করলেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরি।
সদ্য শেষ হওয়া পুর নির্বাচনের পর্যালোচনায় সোমবার দলীয় সভায় অধীরের মন্তব্য: “আপনি যদি সৎ হন, যদি অন্যায় না করেন, তবে চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারির সি বি আই তদন্তে এত ভয় কেন? বিরোধী থাকার সময় কথায় কথায় আপনি তো সি বি আই তদন্ত চাইতেন। এখন সি বি আই তদন্ত চাইলে চুপসে থাকেন কেন?” তিনি মনে করেন, তন্দন্ত হবেই। জড়িতদের নামও প্রকাশ পাবে। |
সেই সঙ্গে অধীর তাঁর সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলরদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “আপনারা সতর্ক থাকবেন। আজ রাতেই হয়তো কাউন্সিলর পিছু ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে তৃণমূল কিনে নিতে চাইবে। সারদার চিটফাণ্ডের টাকা দিয়েই এত দিন কেনা বেচা হত। মনে রাখবেন, ওই টাকা সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করা টাকা।” এ ব্যাপারে সদ্য গ্রেফতার হওয়া সাংসদ কুনাল ঘোষের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সাংসদ কুণাল ঘোষ বলছেন, তিনি একা চুরি করেননি। আরও ১১টা চোর আছে। বিচারকের কাছে তিনি ওই এগারো জনের নাম বলতে চান। কিন্তু তৃণমূলের চল্লিশ চোরের নাম প্রকাশ পাওয়ার ভয়ে কুণালকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। বিচারকের কাছে তাঁকে জবানবন্দি দিতে দেওয়া হচ্ছে না।”
জামিন পেয়ে ছুটিতে যাওয়া মালদহের জেলাশাসক গোদলা কিরণকুমারকে গ্রেফতার করায় শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার পদ থেকে কে জয়রামনকে অপসারণেরও সমালোচনা করেন রেল প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই সরকার দুর্নীতি সরকরা। তাই দুর্নীতির অভিযোগে একজন জেলাশাসককে গ্রেফতার করায় পুলিশ অফিসারকে তাড়িয়ে দেওয়া হল।”
টানা চতুর্থবার বিরোধী শূন্য পুরবোর্ড গড়বেন বলে আশা করেছিলেন তিনি। দলীয় কর্মীদের তাঁর বার্তা, “দু’টি আসনে কংগ্রেসে জিততে না পারায় আপনাদের মতো আমিও দুঃখ পেয়েছি। কংগ্রেসের কয়েক জন গদ্দারি করেছে। তাছাড়া তৃণমূল সারদার টাকা ঢেলেছে। তৃণমূল এবং সি পি এম এই জেলায় বরাবার গাঁটছড়া বেঁধে চলে। তবুও সামান্য কয়েকটা ভোটের ব্যবধানে ওই দু’টি আসন আমাদের হাতছাড়া হয়েছে।” তবে পরিসংখ্যান দিয়ে শতকরা ভোটের হিসাবে পেশ করে কংগেসের ‘গড়’ বহরমপুর এ বার অটুট রয়েছে বলে দাবি অধীরের।
দল বদলের জেরে রাজ্য জুড়েই কংগ্রেস প্রায় নিশ্চহ্ন। এ জেলাতেও কংগ্রেসের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে তৃণমূল। আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে তা ভাল রকমই মালুম হয়েছে অধীরের। অভিভাবকসুলভ ভঙ্গিতে এ ব্যাপারে তাঁর শাসন, “উন্নয়নের অনেক কাজ করা সত্ত্বেও বিগত পুরসভার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ ছিল। মনে রাখবেন, জনগনের ভিক্ষায় আমি-আপনি জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। সে কথা কিন্তু ভুলে যাবেন না। মানুষই জনপ্রতিনিধিদের উপরওয়ালা।” |