রেল প্রতিমন্ত্রীর আগাম জামিন সংক্রান্ত মামলায় তাঁর আইনজীবী ছিলেন ওঁরা তিন জন। পীযূষ ঘোষ, শুভাঞ্জন সেনগুপ্ত এবং নীলাব্জ দত্ত নামে ওই তিন সরকারি আইনজীবী বা অ্যাডিশন্যাল পাবলিক প্রসিকিউটরকে (এপিপি ) সোমবার তাঁদের পদ থেকে ‘সাময়িক ভাবে’ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বহরমপুর জজ কোর্টের সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায়।
অধীর চৌধুরীর আইনজীবী হিসেবে মামলা লড়া -ই তাঁদের ‘অপরাধ’। এ ব্যাপারে দেবাশিসবাবুও কোনও আড়াল রাখছেন না। তিনি বলেন, “কামাল শেখ খুনের মামলায় অভিযুক্ত রেল প্রতিমন্ত্রীর হয়ে মামলা লড়ছেন নীলাব্জ দত্ত ও শুভাঞ্জন সেনগুপ্ত। ওই মামলায় সরকার যেখানে বিবাদী পক্ষ, সেখানে বাদী পক্ষের হয়ে মামলা লড়ে নীতিগত ভাবে তাঁরা ঠিক করেননি। ওই মামলা শুরু হওয়ার আগে পিপি হিসেবে আমি তাঁদের নিষেধও করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা আমার কথায় কর্ণপাত করেননি।”
অধীরের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে শুক্রবার তুষার মজুমদারকে সরকারি আইনজীবী (সরকারি প্লিডার ) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আইন দফতরের ‘লিগ্যাল রিমেমব্র্যান্সার’ বিভাগ থেকে চিঠি পাঠিয়ে তুষারবাবুকে ওই পদ থেকে পাকাপাকি ভাবে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে নীলাব্জবাবুদের ক্ষেত্রে এখনও কোনও লিখিত নির্দেশ আসেনি বলে জানান দেবাশিসবাবু। তাহলে কি শাসক দলের মৌখিক নির্দেশে এই অপসারণ?
সরকারি আইনজীবী তথা তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা ল’সেলের চেয়ারম্যান দেবাশিসবাবু এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “সরকারের মর্যাদা নষ্ট হবে এমন কোনও কাজ করা উচিত নয় সরকারি আইনজীবীদের। তাঁরা অধীর চৌধুরীর হয়ে মামলা লড়ে ঠিক কাজ করেননি বলে আমার মনে হয়েছে। তাই পিপি হিসেবে আমি আমার সিদ্ধান্ত তাঁদের জানিয়ে দিয়েছি।” নীলাব্জবাবু বলেন, “সরকারি আইনজীবীর অধীনে আমরা কাজ করি। সেই সুযোগে অন্যায় ভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করে আদালতের সম্মানহানি করেছেন ওই সরকারি আইনজীবী।”
তবে অধীরের হয়ে মামলা লড়ার জন্যই যে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তা মেনে নিয়েছেন জেলা তৃণমূলের নির্বাহী সম্পাদক হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম। এ দিন সেই আবেদনেই সাড়া দিয়েছে আইন দফতর।”
|