|
|
|
|
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা |
দেখভালের সংস্থা গড়ে প্রকল্প রূপায়ণে জোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরির কাজ। প্রকল্পের কাজে গতি আনার লক্ষ্যে তাই ৮টি ‘প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্ট এজেন্সি’ (পিআইএ) গড়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। এর মধ্যে ঝাড়গ্রামেই হচ্ছে দু’টি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুরে আগে ২টি পিআইএ ছিল। নতুন ২টি মিলিয়ে মোট ৪টি পিআইএ হবে। এ ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আরও ছ’টি পিআইএ, একটি এপিআইএ-কে পিআইএ-তে উন্নীত করা ও একটি নতুন এপিআইএ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব জায়গাতেই এক জন করে এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের পাশাপাশি ৩ জন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, ৯ জন করে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও একাধিক কর্মী নিয়োগ করা হবে। তবে সবই হবে চুক্তির ভিত্তিতে।
রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যা, আলাদা এজেন্সি করলে রাস্তার কাজ দেখভালে সুবিধা হবে। জেলায় আগে ২টি পিআইএ ছিল, যেখানে ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীর সংখ্যা কম। আগে কম কাজ হত বলে চলে যেত। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গত ১৩ বছরে ১০১৫.৬৯ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে পেরেছিল। সেই জায়গায় ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে বরাদ্দ মিলেছে ১৫১০ কিলোমিটার। বেশি কাজ করতে হলে তো বেশি ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীর প্রয়োজন। রাস্তার কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা দেখভাল করা, নিয়মিত পরিদর্শন করা, ঠিকাদারকে সময়ে-সময়ে বিল মেটানো সবই জরুরি। কাজ শুরু হলে যাতে পরিকাঠামোগত দিক দিয়ে ফের না সমস্যা হয় সেই কারণেই পিআইএ এবং এপিআইএ তৈরির জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পিআইএ তৈরির নির্দেশও পৌঁছে গিয়েছে জেলায়-জেলায়।
কিন্তু প্রশ্ন হল, পরিকাঠামো উন্নয়ন করলেই কি রাস্তা তৈরি করা সম্ভব? বরাদ্দ মিললে কী হবে? ঠিকাদারেরা যে কাজ নিতেই রাজি হচ্ছেন না।
পরপর তিনবার দরপত্র আহ্বান করার পরেও মাত্র ৫১৫.৩৮ কিলোমিটারের বেশি ঠিকাদার মেলেনি। ঠিকাদারদের অভিযোগ, এই প্রকল্পে কিলোমিটার প্রতি রাস্তা তৈরি করতে যে বরাদ্দ মেলে সেই টাকায় বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজ করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ঠিকাদারদের যুক্তি, এখন সর্বত্রই স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা বা নেতার অনুগামীরা ‘সিন্ডিকেট’ তৈরি করে বসে রয়েছেন। ‘সিন্ডিকেটে’র কাছে রাস্তা তৈরির উপকরণ কিনতে অনেক বেশি দাম দিতে হয়। তাছাড়াও এই প্রকল্পে জমি পাওয়ারও সমস্যা রয়েছে। এমনকী পাশের জমি থেকে মাটি তুলতে গেলেও বাধা আসে। এ সব নিয়ে ঝামেলা বাধলে অনেকে আবার আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতে মামলা দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলে আরও বিপদ। কারণ, রাস্তা তৈরির পর ৫ বছরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হয় ঠিকাদারকে। বিটুমেনের রাস্তা এমনিতেই ৩ বছরের পর ভাঙতে থাকে। তার উপর আদালতে মামলা চললে, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা তৈরির চূড়ান্ত শংসাপত্র মেলে না। শংসাপত্র না পেলে তার জন্য কেটে রাখা ১০ শতাংশ টাকাও মেলে না।
এই সব সমস্যা না মিটিয়ে কাজ দেখভালের জন্য সংস্থা গড়ে কতটা লাভ হবে সেটাই এখন প্রশ্ন। |
|
|
|
|
|