অক্ষয়া অমাবস্যায় মেলার পরিবেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • অন্ডাল |
কোনও মন্দিরে নয়, দেবীর পুজো হত উই ঢিবিতে। পরে অবশ্য এলাকাবাসীরা কংক্রিটের মন্দির নির্মাণ করে দেবীর পুজো আরম্ভ করেন। ৩৮ বছর ধরে অক্ষয়া অমাবস্যায় হয়ে আসছে সেই পুজো। অন্ডাল মোড়ের বামাকালী পুজো বর্তমানে আক্ষরিক অর্থেই এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। |
শিবের বুকে বাঁ পায়ে দাঁড়িয়ে বামাকালী।—নিজস্ব চিত্র। |
অন্ডাল বিডিও কার্যালয়ের পাশেই অন্ডাল রেলশহরের প্রধান রাস্তার ধারে স্থানীয় মন্দিরে পুজো হয় দেবী বামাকালীর। এক সময় মন্দির ছিল না। জঙ্গলে ঘেরা একটি উই ঢিবিকে পুজো করা হত। মন্দির পরিচালন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শান্তি মণ্ডল জানান, অতীতে অন্ডালের বিস্তীর্ণ এলাকা জঙ্গলে ঘেরা ছিল। ভিন্ন সময়ে নিরালায় নানা সাধক এখানে সাধনা করতে এসেছেন বলে পুর্বপুরুষদের মুখে মুখে প্রচার হয়ে এসেছে। এখানেও এক সাধক এই উই ঢিবিতে পুজো শুরু করেছিলেন বলে শোনা যায়। ১৯৭৬ সালে তাঁরা কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা তালপাতার একটি অস্থায়ী মন্দির নির্মাণ করে নিয়মিত পুজো শুরু করেন। উই ঢিবির উপরেই মাটির মূর্তির প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছিল। পরে এলাকার মানুষের সহযোগিতায় কংক্রিটের মন্দিরে শিলামুর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেবী এখানে শিবের বুকে বাঁ পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বলে বামাকালী নামে পরিচিত। অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কাঞ্চন মিত্র জানান, বামাকালী পুজোকে কেন্দ্র করে রীতিমতো মিলন মেলার পরিবেশ তৈরি হয় এলাকায়। এই পুজোয় শ্রীরামপুর, মদনপুর, রামপ্রসাদপুর, অন্ডাল রেলশহর, ভাদুরগ্রাম, কাজোড়া থেকে মানুষ আসেন প্রতিমা দর্শন করতে। এ বছর সোমবার বামাকালীর পুজো। মঙ্গলবার থাকছে পংক্তিভোজনের ব্যবস্থা।
অন্ডালে সর্বজনীন পুজোর চেহারা নিয়েছে বেশ কিছু পারিবারিক পুজো। অক্ষয়া অমাবস্যায় পুজো হয় এখানেও। অন্ডাল গ্রামে সুত্রধর পাড়ার দীর্ঘদিনের পারিবারিক পুজো এলাকায় বিখ্যাত। গ্রামের বাসিন্দা তথা অন্ডাল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজু রায় জানান, পুজোর পর দিন পংক্তিভোজের আয়োজন করা হয়। এই গ্রামে ঘোষদের পুজোর বয়স ৫০ বছর পেরিয়েছে। রাজুবাবু জানান, সংলগ্ন দুবচুরিয়া গ্রামের শ্মশানে ১৫ বছর আগে এলাকার চার যুবক পুজো শুরু করেছিলেন। এখানে পুজো শেষ হওয়া মাত্র পংক্তিভোজ শুরু হয়ে যায়। |