নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
তৃণমূলকে রুখতে প্রয়োজনে ফের শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত দিল দার্জিলিং জেলা সিপিএম। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে দলের সদর দফতরে বৈঠকের পরে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এ কথা কার্যত স্পষ্ট করে দেন। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা বামফ্রন্টের দার্জিলিং জেলার আহ্বায়ক অশোকবাবু বলেন, “৪৭ আসনের শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে অনাস্থা আনার জন্য দরকার অন্তত ১৬ জন কাউন্সিলর। আমাদের রয়েছে ১৮ জন। তৃণমূলের রয়েছে ১৫ জন। তাও তৃণমূল অনাস্থা আনবে বলে ঘোষণা করেছে। যা কি না নৈতিক ভাবে হওয়া কখনও সম্ভব নয়। আর অনৈতিক ভাবে অনাস্থা আনা হলে আমরা বিরোধিতা করব।” সে ক্ষেত্রে বামেদের সমর্থনে পুরবোর্ড দখলে রাখতে পারবে কংগ্রেস। কারণ, কংগ্রেসের কাউন্সিলর সংখ্যা ১৪ জন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট উভয়ে ১৫টি করে আসনে জেতার পরেও যৌথভাবে বোর্ড গড়তে পারেনি। মেয়র পদ নিয়ে মতানৈক্যের জেরে দু-দল যুযুধান হয়। সেই সময়ে কার্যত বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস এককভাবে পুরবোর্ড দখল করে। পরে মেয়র ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বোর্ড গড়েন। দ্বিতীয় দফায় পৌঁছয় বিরোধের মেয়র তৃণমূলের মেয়র পারিষদদের অপসারণ করেন। তৃণমূলও বোর্ড ছেড়ে বেরিয়ে যায়। সেই থেকে এককভাবে পুরবোর্ড চালাচ্ছে কংগ্রেস। বাজেট পাস করানো সহ নানা ব্যাপারে বামেদের সমর্থনও প্রকারান্তরে পাচ্ছে কংগ্রেসের পুরবোর্ড। যদিও প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর দাবি, “কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানোর প্রশ্ন নেই। তবে অনৈতিক ভাবে অনাস্থা এনে তৃণমূলকে সুবিধাও করতে দেব না বলেই আমাদের অবস্থান আগাম জানানো হল। আমরা তৃণমূলের অনাস্থার বিরোধিতা করব।”
যা সোনার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে কী হচ্ছে, কী ভাবে চলছে সকলেই জানেন। গৌতমবাবুর দাবি, “কংগ্রেস-বাম আঁতাত নতুন কিছু নয়। শিলিগুড়ির মানুষ সেটা জানেন বলেই ভোটের ফলে নিয়মিত জবাব দিয়েছেন। অতীতেও বামেরা কংগ্রেসকে সমর্থন করে পুরবোর্ড চালানোর সুযোগ দিয়েছে। এখনও বামেরা যে সংখ্যালঘু কংগ্রেস পুরবোর্ডকে সমর্থন করছে তাও স্পষ্ট। প্রয়োজনীয় কাউন্সিলর নিয়ে আমরা অনাস্থা আনতে পারলে বামেরা যদি তাঁর বিরোধিতা করে তবে মানুষ তা দেখবে। এই বোর্ডকে সিপিএম যে সমর্থন দিচ্ছে তা আরও পরিষ্কার হবে।” এর পরে গৌতমবাবুর কটাক্ষ, “বামেরা বলছেন এই পুরবোর্ড ব্যর্থ। আর পক্ষান্তরে তাদের সমর্থনের কথা বলছেন। এটা দ্বিচারিতা নয়!”
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকার জানান, তাঁরা যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল যে ভাবে কংগ্রেসের দখলে থাকা পুরসভা, পঞ্চায়েত দখল করতে চাইছে তা সমর্থনযোগ্য নয়। সে জন্য সকলেই আমাদের পাশে দাঁড়াবে।
|