গ্রামের পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে মিলল এক বধূর দেহ। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় বাঁকুড়ার ওন্দা থানার সুরপানগর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মঙ্গলা বাউরি (২১) সুরপানগর গ্রামেরই বাসিন্দা। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মৃতার বাপের বাড়ির সদস্যেরা ও গ্রামবাসী। যদিও ঘটনার দিন বিকেল পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর সাতেক আগে নিজেরই পাড়ার ছেলে রঞ্জিত বাউরির সঙ্গে বিয়ে হয় মঙ্গলার। তাঁদের একটি তিন বছরের ছেলেও রয়েছে। রঞ্জিত-মঙ্গলা, দু’জনের পরিবারই অত্যন্ত গরিব। দুই বাড়ির লোকেরা দিনমজুরি করে সংসার চালান। গ্রামবাসীরা জানান, বিয়ের পর থেকেই টাকাপয়সার দাবিতে মঙ্গলার উপর নির্যাতন চালাতেন রঞ্জিত। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলার পরিবার একাধিকবার স্থানীয় থানারও দ্বারস্থ হয়েছে। কয়েক মাস আগে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দুই পরিবারকে নিয়ে মীমাংসায় বসে। শানতোড় অঞ্চলের তৃণমূল নেতা সুবোধ মণ্ডল বলেন, “মঙ্গলার সঙ্গে শান্তিতে সংসার করার কথা বলা হয়েছিল রঞ্জিতকে।” পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে সরকারি প্রকল্পে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়ারও আশ্বাসও দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মিঠু দাস। এর পরেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আপাতত নিজের বাপের বাড়িতেই থাকছিলেন মঙ্গলা।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার দুপুরে মঙ্গলাকে বাপের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন রঞ্জিত। এর পর সারাদিন বাড়ি ফেরেননি ওই দম্পতি। রাতে গ্রামের আশেপাশে তাঁদের খোঁজে তল্লাশিও চালান গ্রামবাসীরা। বৃহস্পতিবার ভোরে রঞ্জিতকে তাঁর বাড়িতে দেখতে পাওয়া গেলে গ্রামের যুবকেরা তাঁর কাছে মঙ্গলার খোঁজ করেন। রঞ্জিত সদুত্তর দিতে পারেননি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে পৌঁছয়। পুলিশই তল্লাশি চালিয়ে গ্রামের পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে মঙ্গলার দেহ উদ্ধার করে। মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে পাথর মঙ্গলার বাবা অশোক বাউরি। তিনি বলেন, “মেয়ের খুনির চরম শাস্তি চাই।” রঞ্জিতের পরিবারের সঙ্গে এ দিন বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত শুরু হবে। |