স্টেডিয়ামের করিডর দিয়ে হাঁটছেন আর মাথা চাপড়াচ্ছেন। কখনও তীব্র ক্ষেভে ফেটে পড়ে বলছেন, “ওটা রেফারি পেনাল্টি দেবে না! আমাকে তো ওদের গোলকিপার পা ধরে টেনে ফেলে দিল। আবার আমাকেই কার্ড দেখাল।”
মণিপুরের রেফারি খাম্বা সিংহের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলতেই ইস্টবেঙ্গলের গোল মেশিন এডে চিডির ক্ষোভের অভিমুখ বদল হয়ে যায়। “ওই গোল কী করে মিস করলাম, নিজেও বুঝতে পারছি না। বলটা ওভাবে ক্রসপিসে লেগে গেল! নিজের ওপরই অসম্ভব রাগ হচ্ছে।”
সাংবাদিক সম্মেলনে অসংখ্য টিভি বুমের সামনে আইন বাঁচাতে বলেছিলেন, “ম্যাচ শেষ। রেফারি নিয়ে কিছু বলব না। বক্সের মধ্যে ট্রিপ করা সব সময়ই ফাউল।” কিন্তু সেখানে যাওয়ার আগে অবশ্য আর্মান্দো কোলাসোর ক্ষোভ বেরিয়ে এসেছিল। “মাঠে দাঁড়িয়ে আমি পরিষ্কার দেখেছি, চিডিরটা নিশ্চিত পেনাল্টি ছিল।” একা চিডি নন, পুরো ইস্টবেঙ্গল শিবিরই এ দিনের ম্যাচ না জেতার জন্য রেফারির দিকেই আঙুল তুলেছেন।
একেই পেনাল্টি পাননি। তার ওপর আবার ম্যাচের শেষের দিকে গোলের একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। সব মিলিয়ে চরম হতাশ হয়ে পড়েছিলেন চিডি। ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে গাড়ির দিকে যখন হেঁটে যাচ্ছেন, সমর্থকরা তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। সেটা দেখে যেন আরও হতাশা ঝরে পড়ল। “আমি গোলটা মিস না করলে তিন পয়েন্ট পেতই দল। আমার খারাপ লাগা তাই অনেক বেশি। সমর্থকদের কী জবাব দেব?” |
গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়া। ম্যাচ শেষে চিডি-র্যান্টি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
গোল মিস করে চিডি যখন মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত, তখন দলকে চাঙ্গা করতে আর্মান্দোর পেপ টক, “এখনও অনেক পথ বাকি। মাঠে গিয়ে লড়াই করো। হতাশ হওয়ার মতো কিছুই ঘটেনি। লিগ অনেক লম্বা। অনেক অঘটন ঘটবে।” ভারত-সফরে বেরোনোর আগে গোয়ার অভিজ্ঞ কোচ কোনও ভাবেই চাইছেন না, ফুটবলাররা মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়ুক।
পুণে-শিলং-গোয়া-বেঙ্গালুরু হয়ে আবার গোয়া— দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে টানা পাঁচটি অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে হবে চিডিদের। তার আগে চোট-সমস্যা আর্মান্দোর কপালের ভাঁজ চওড়া করেছে। বলেও দিলেন, “যুবভারতীর টার্ফ আমার কোনওদিনই পছন্দ নয়। এখানে খেললে চোট হবেই। বিপদে পড়তে হবে আমাদের, কোচেদের। এমনিতেই দলের ফিটনেস খুব খারাপ। কিন্তু সময় কোথায় সেটা ঠিক করার!” মেহতাব, খাবরা, সৌমিক দলের প্রধান তিন স্তম্ভকেই পাওয়া যাচ্ছে না পরের অ্যাওয়ে ম্যাচে। যা শুনে চিডি বললেন, “চোট সমস্যা এ বার আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে। দলের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে ওঠার আগেই কোনও না কোন ফুটবলারের চোট হয়ে যাচ্ছে।” এ দিকে জাতীয় দলের হয়ে খেলে এখনও ফেরেননি জেমস মোগা। পুণেতে সরাসরি তাঁর দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা।
ম্যাচ ড্র করে অবশ্য প্রচন্ড খুশি ইউনাইটেড কোচ এলকো সতোরি। শুক্রবারই পুণে যাচ্ছেন দল নিয়ে। তার আগে বলে গেলেন, “পুরো টিম হাতে থাকলে আজ ম্যাচটা জিততাম। প্রথমার্ধটা ওরা খেলেছে। পরে স্ট্র্যাটেজি বদলে কিন্তু ম্যাচের লাগাম আমরাই তুলে নিয়েছিলাম।” |