পুরভোট শেষ। কিন্তু মেদিনীপুর শহরটাকে দেখলে তা বোঝার উপায় নেই। চারদিকে এখনও প্রচারের পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার। অলিগলি জুড়ে চেন-ফ্ল্যাগ। এর ফলে ছোট-বড় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য। ক্ষুব্ধ শহরবাসীর বক্তব্য, শুধু রাস্তা নয়, অনেক জায়গায় মনীষীদের মূর্তিও ফেস্টুন-ব্যানারে ছেয়ে রয়েছে।
সমস্যা সমাধানে কিছু কিছু এলাকায় প্রার্থীরাই পোস্টার-ব্যানার সরাতে তৎপর হয়েছেন। ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী কংগ্রেসের কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের নির্বাচনী এলাকায় ইতিমধ্যে ব্যানার-ফেস্টুন খোলা শুরু করেছেন। তাঁর কথায়, “চারদিকে পোস্টার-ফেস্টুন থাকলে শহরকে দেখতে ভাল লাগে না। তাই ভোট মিটতেই আমার নির্বাচনী এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন খোলা শুরু করেছি। কর্মীদের বলেছি, চেন ফ্ল্যাগও খুলে ফেলতে হবে।” ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী তৃণমূলের জিতেন্দ্রনাথ দাসও নিজে দাঁড়িয়ে থেকে প্রচার সরঞ্জাম খোলাচ্ছেন। জিতেন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “দলের কর্মীরাই প্রচার সরঞ্জাম খুলে ফেলছেন। ভোটের আগে দেওয়াল লিখনও হয়েছে। আমার ইচ্ছে রয়েছে, ওই দেওয়াল লিখন মুছে চুনকাম করব।” |
বিজেপির শহর সভাপতি অরূপ দাসও মানছেন, “ভোটের সময় পোস্টার-ব্যানার দিয়ে প্রচার করতেই হয়। তবে, ভোটের পর তা সরিয়ে ফেলা উচিত। দলের প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকার প্রচার সরঞ্জাম খুলে ফেলার কথা বলেছি।”
ভোট এলেই শহর জুড়ে প্রচার সরঞ্জাম ছেয়ে যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলই প্রচারের জন্য পোস্টার-ফেস্টুন তৈরি করে। এখন আবার ফ্লেক্সের চল রয়েছে। মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে শহিদ মূর্তি রয়েছে। অনেক সময় প্রচার সরঞ্জামে এই সব মূর্তিগুলোও ঢাকা পড়ে। অবশ্য শুধু ভোটের সময়ই নয়, বছর ভর বিভিন্ন সংগঠন-সংস্থা শহরের বেশ কিছু মোড়ে পোস্টার-ফেস্টুন রাখে। যার আশপাশে শহিদ মূর্তি রয়েছে। শহরবাসীর বক্তব্য, এ নিয়ে সকলেরই সচেতন হওয়া উচিত। শহিদ মূর্তির সামনে কেন? পোস্টার-ফেস্টুন তো অন্যত্রও রাখা যেতে পারে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে সচেতনতা প্রচারে নেমেছে শহরের গোলকুয়াচক উন্নয়ন সমিতি। সমিতির পক্ষ থেকে এলাকায় বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মূর্তির সামনে একটি ফ্লেক্সও রাখা হয়েছে। যেখানে আবেদন রাখা হয়েছে, ‘শহিদ মূর্তি ঘিরে পোস্টার-ফেস্টুন না লাগিয়ে আসুন তাঁদের শ্রদ্ধা জানাই।’ সমিতির পক্ষে কেকা ঘোষ বলছিলেন, “এ নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতেই আমাদের এই উদ্যোগ। আশপাশে ব্যানার-ফেস্টুন থাকলে শহিদ মূর্তিগুলো কার্যত ঢাকাই পড়ে যায়। সচেতনতা বাড়লেই এই প্রবণতা কমবে।” |