|
|
|
|
প্রশাসন সাফ করতে রাজনীতিতে রশিদ |
সংবাদ সংস্থা • জয়পুর |
কথায় বলে, প্রতিষ্ঠানে বদল আনতে গেলে সেই প্রতিষ্ঠানেরই অংশ হতে হয়। এই তত্ত্বেই বিশ্বাসী বছর চল্লিশের রশিদ হুসেন। ২০০৮ সালে জয়পুর বিস্ফোরণের ঘটনায় যখন বিনা কারণে পুলিশের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন, সে দিনই বুঝে গিয়েছিলেন যে গলদ রয়েছে প্রশাসনের অন্দরে, কোনও ব্যক্তি বিশেষের নয়।
পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ার রশিদ একটা ছোট্ট ভুলের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন পরিবার থেকে, হারিয়েছিলেন চাকরি। তছনছ হয়ে গিয়েছিল সুখী, গোছানো, নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। তাই তখন থেকেই ঠিক করেছিলেন, প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে কিছু একটা করবেন।
আর সেই কিছু করার তাগিদেই আগামী ডিসেম্বরে রাজস্থানের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন রশিদ হুসেন। কোনও পরিচিত রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় নয়, নিজের চেষ্টাতেই রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। আর ভেতর থেকে বদলাতে চান প্রশাসনকে। সাফ করতে চান অন্দরের দুর্নীতি।
২০০৮ সালের সেই দিনগুলো এখনও ভুলতে পারেননি রশিদ। বললেন, “বিস্ফোরণের পরের দিন সাওয়াই মান সিংহ হাসপাতালের বাইরে কয়েক জন বন্ধু মিলে একটা ত্রাণ শিবির করছিলাম আমরা। প্রায় দশ দিন ধরে কাজ করেছিলাম। হঠাৎই এক দিন পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেল আমায়। আমার বিরুদ্ধে নাকি বিস্ফোরণে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। আট দিন আটকে রাখার পর ভুল বুঝতে পেরে আমায় ক্লিন চিট দিয়েছিল ওরা। কিন্তু তত দিনে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। চাকরি হারিয়েছি, নষ্ট হয়ে গিয়েছে সম্মান। শুধু একটি বিশেষ ধর্ম পালন করার ‘অপরাধে’ ওরা জঙ্গি বলে ভেবে নিয়েছিল আমায়।” বলতে বলতেই হতাশা ঝরে পড়ছিল গলায়। সখেদে বললেন, “শুধু আমি নই। আমার মতো এ রকম অসংখ্য নির্দোষ মানুষ অকারণ সাজা ভোগ করেছেন, করছেন। কারণ তাঁরা প্রতিবাদ করতে পারেন না। আর প্রশাসন তো নিজেই ঠুঁটো। একমাত্র রাজনৈতিক পথেই এর পরিবর্তন সম্ভব।” রশিদ জানালেন, কলেজ জীবন থেকেই রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিছু সামাজিক কাজ কর্ম শুরুও করেছিলেন ছাত্র জীবনে। কিন্তু মা-বাবার অপছন্দের কারণে রাজনীতি ছেড়ে সফল কেরিয়ার গড়ায় মন দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠাও পেয়েছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। কিন্তু ২০০৮-এর ঘটনা ছাত্র জীবনের সেই সুপ্ত ইচ্ছাকেই আরও জোরদার করে তুলেছে। রাজনীতির আঙিনায় রশিদের প্রবেশ প্রশাসনকে কতটা দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবে, তা সময়ই বলতে পারবে।
|
|
|
|
|
|