কর্তাদের সামনেই কোন্দল পঞ্চায়েত সদস্যদের
লাকাবাসীর অভাব-অভিযোগ শুনতে গিয়েছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের দ্বন্দ্বে হই-হট্টগোল চলল বৈঠকে। ঝামেলা-গোলমাল বাধার আশঙ্কায় বাড়ি ফিরে গেলেন অনেক বাসিন্দা। বুধবার রাতে অন্ডালের উখড়ায় বিশৃঙ্খলার পরে খানিক ক্ষণ সভা চলে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করেন, এমনিতে অভাব-অভিযোগের কথা কর্তাদের জানানোর সুযোগ মেলে না। বাড়ির কাছেই যখন সেই সুযোগ মিলল, পঞ্চায়েত সদস্যদের নিজেদের কোন্দলে তা-ও হারালেন অনেকে।
উখড়া পঞ্চায়েতে ২২টি আসনের মধ্যে ১৮টি তৃণমূলে দখলে। বুধবার উখড়া কে বি ইনস্টিটিউশনের অধিবেশন কক্ষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মহকুমাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। দু’জন বাসিন্দার প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা শেষ হতে না হতেই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সালাউদ্দিন সুলতান দলেরই আরও চার পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে সেখানে হাজির হন। এই সভা গোপনে করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে চেঁচামেচি জুড়ে দেন তিনি। তাঁর দাবি, এই বৈঠক সর্ম্পকে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, এই দায়িত্ব প্রধানের। প্রধান আশিস কর্মকার জানিয়ে দেন, অল্প সময়ের মধ্যে এই বৈঠকের আয়োজন করতে গিয়ে তিনি সব সদস্যকে খবর দিতে পারেননি। এ কথা শুনে সালাউদ্দিনরা হই-হট্টগোল জুড়ে দেন। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে চিৎকার-চেঁচামেচি চলে। শুরু থেকে এক ভ্যান পুলিশকর্মী থাকলেও গণ্ডগোলের আশঙ্কায় অন্ডাল থেকে আরও একটি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বেশ কিছু ক্ষণ গোলমাল চলার পরে সালাউদ্দিনেরা চলে যান। তবে আধ ঘণ্টা পরে আবার তাঁরা এক দল লোক নিয়ে ফিরে এসে দাবি করেন, এই সভা অনুষ্ঠান কোনও দিন আয়োজন করা হোক। প্রশাসনের কর্তা থেকে উপস্থিত এলাকাবাসী, সকলের উপস্থিতিতেই ফের এক প্রস্ত বিশৃঙ্খলা চলে। সভাস্থল ছাড়তে শুরু করেন অনেকে। খানিক পরে ফের বিক্ষুব্ধেরা সভাস্থল ছেড়ে চলে যান। ঘণ্টাখানেক প্রশ্নোত্তরের পরে বৈঠকও শেষ করে দেওয়া হয়। এলাকার বাসিন্দা কবি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে ঐক্য রাখলে এই বৈঠকের আরও সুফল পেতাম আমরা।”
বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত প্রধান আশিসবাবু বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বিশৃঙ্খলা করতে চেয়েছিল সালাউদ্দিন। উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। যা করার তাঁরাই করবেন।” সালাউদ্দিনের পাল্টা দাবি, “পঞ্চায়েতের দশ জন সদস্য এই বৈঠকের কথা জানতেন না। তাই প্রথমে আট জন পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসি। পরে এলাকার অনেক লোকজন আমাদের অফিসে আসায় তাঁদের সঙ্গে নিয়ে যাই। আমরা প্রশাসনের আধিকারিকদের বলতে চেয়েছিলাম, উখড়ার জনসংখ্যা যেখানে ৪০ হাজার, সেখানে একশো জনকে নিয়ে বৈঠক আদতে প্রহসন। আমরা পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে দলীয় নেতৃত্বকে জানাচ্ছি।” সিপিএম নেতৃত্বও এই বিশৃঙ্খলার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগের কথা মানেননি।
এ দিনের বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা কুমুদ রায় অভিযোগ করেন, উখড়া বাজারে নর্দমার উপরেই দীর্ঘদিন হকারেরা বসছেন। এর জেরে বাজারের নিকাশি ব্যবস্থা বির্পযস্ত। মহকুমাশাসক প্রধানকে বিষয়টি দেখতে বলেন। বণিক সংগঠনের সভাপতি মহাদেব দত্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভাল করার অনুরোধ জানান। তিনি অভিযোগ করেন, উখড়ায় চিকিৎসকের সংখ্যা কমে গিয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতে সপ্তাহে চার দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মেলে, সেই ব্যবস্থা হওয়া দরকার। মহকুমাশাসক বিষটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণ রায় আবার জানান, উখরায় ২৬টি বাজার থাকলেও বিধি মেনে কোনও শৌচালয় নেই। প্রতিটি বাজারের মালিক যাতে শৌচাগার নির্মাণ করেন, সেই নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ করেন মহকুমাশাসককে। স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল মুখোপাধ্যায় আনন্দ মোড় থেকে পাঠকপাড়া ও রুইদাসপাড়া পর্যন্ত ভাঙা রাস্তা সংস্কারের দাবি জানান। তিনি কমিউনিটি হল বাতানুকূল করার প্রস্তাবও দেন। আর এক বাসিন্দা গোড়া সাইগল আবার পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর দাবি করেন। অপরিস্রুত জল খেয়ে এলাকায় পেটের রোগ ছড়ায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। গরমে যে জল সরবরাহ করা হয়, তা-ও পরিস্রুত থাকে না বলে অভিযোগ তাঁর।
মহকুমাশাসক দাবিগুলি খতিয়ে দেখে পূরণের আশ্বাস দেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.