তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন চাকুলিয়ার প্রয়াত প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক রমজান আলির মেয়ে নাজিয়া আলি ফতেমা। বুধবার সকালে নাজিয়া রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় সার্কিট হাউসে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। পরে সার্কিট হাউসের বাইরের রাস্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে নাজিয়ার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মুকুলবাবু ও উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য। এদিন তৃণমূলে যোগ দেন তাঁর স্বামী মহম্মদ মঞ্জর সহ চাকুলিয়া এলাকার শতাধিক বাসিন্দা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মকান্ড দেখে এদিন অনেকেই ফরওয়ার্ড ব্লক চেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হল, নাজিয়া আলি ফতেমার যোগদান। তিনি প্রাক্তন ও প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক রমজান সাহেবের মেয়ে।”
বর্তমানে নাজিয়ার ভাই আলি ইমরান রমজ চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক। তাঁর কাকা হাফিজ আলম সাইরানি প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন ত্রাণমন্ত্রী ছিলেন। বিধায়ক আলি ইমরান রমজ বলেন, “দিদি নাজিয়া রমজান আলির মেয়ে বলেই তৃণমূলে এতটা গুরুত্ব পাচ্ছেন। ফরওয়ার্ড ব্লক এই ঘটনাকে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না।”
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক তথা করণদিঘির বিধায়ক গোকুল রায় জানান, নাজিয়া দলের কোনও দায়িত্বে ছিলেন না। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “রমজান আলি দলের নেতা ছিলেন। আলি ইমরাম রমজ দলের সম্পদ। কিন্তু নাজিয়া ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন সাধারণ সমর্থক ছিলেন। এতে দলে বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না।”
রমজান আলি ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত টানা চাকুলিয়ার (সেই সময় চাকুলিয়া বিধানসভার নাম গোয়ালপোখর বিধানসভা ছিল) ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক ছিলেন। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য রমজান সাহেব ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি খুন হন। এর পরে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হাফিজ আলম সাইরানি চাকুলিয়ার বিধায়ক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সাল থেকে আলি ইমরান রমজ চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়কের পদে রয়েছেন। প্রায় ১২ বছর আগে চাকুলিয়া এলাকারই বাসিন্দা পেশায় একটি বেসরকারি স্কুলের কর্ণধার মহম্মদ মঞ্জরের সঙ্গে নাজিয়ার বিয়ে হয়। তাঁদের দেড় বছর বয়সী একটি ছেলেও রয়েছে।
এদিন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর নাজিয়া বলেন, “এতদিন ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন নেত্রী হিসেবে এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কারও সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। তবে এতটুকু বলতে পারি, গত তিন দশকে চাকুলিয়ায় সার্বিক উন্নয়ন হয়নি। রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান সহ নানা দিক থেকে চাকুলিয়া পিছিয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে চাকুলিয়ার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই তৃণমূলে যোগ দিলাম। এতে পারিবারিক সম্পর্কের কোনও অবনতি হবে না।” যা শোনার পরে আলি ইমরান রমজের প্রতিক্রিয়া, “কেউ যদি কোনও দলে যোগ দিয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে পারেন, তা হলে এর চাইতে আনন্দের কিছু নেই। তবে চাকুলিয়ার যা উন্নয়ন হয়েছে বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই হয়েছে। |
